এপিজির কো-চেয়ার হলেন আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান

এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিংয়ের (এপিজি) কো-চেয়ার মনোনিত হয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান।

মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকারের অঙ্গীকার ও উদ্যোগের স্বীকৃতি স্বরূপ সংস্থাটির সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে তাকে মনোনিত করে।

তিনি ২০১৮-২০২০ মেয়াদে অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশকে এপিজি’র কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪১টি দেশের সংগঠন এপিজি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল একশন টাস্কফোর্স এর একটি আঞ্চলিক সংস্থা। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার সিডনী ভিত্তিক এই আঞ্চলিক সংগঠনটিতে সদস্য ছাড়াও ৮ টি দেশ ও ২৮ টি আন্তর্জাতিক সংস্থা পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ এপিজি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে এর সকল বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ গ্রহণসহ সংস্থাটির কার্যক্রম পরিচালনা ও বেগবান করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ২০০৩-০৪, ২০০৪-০৫, ২০১০-২০১১ ও ২০১১-২০১২ মেয়াদে সংস্থাটির মুল নীতি নির্ধারনি কমিটি, স্ট্রিয়ারিং গ্রুপের সদস্য হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে। বর্তমানেও বাংলাদেশ এপিজি’র মুল নীতি নির্ধারনি কমিটির কাজ করছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এপিজি’র প্রাইমারী কন্ট্যাক্ট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ ও বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করছে; পাশাপাশি আঞ্চলিক পর্যায়ে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও এর প্রতিবেশী দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এপিজি’র ১৩তম টাইপোলজী কর্মশালা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী মহোদয় ও আইন মন্ত্রী মহোদয় উপস্থিত ছিলেন।

বিএফআইইউ প্রধান জনাব হাসান এপিজি’র কো-চেয়ার হিসেবে এর সদস্য ৪১টি দেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নয়নে নের্তৃত্ব প্রদানের পাশাপাশি সংস্থাটির বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, বার্ষিক সভার আয়োজনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।

আবু হেনা মোঃ রাজী হাসান ২০১২ সাল হতে বিএফআইইউ এর প্রধান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর নের্তৃত্বে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব এবং ওয়ার্কিং কমিটি ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটির সদস্য।

তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশকে এফএটিএফ এর ধুসর তালিকা হতে বের করে আনা ও বিশ্বের সকল এফআইইউ’র সংগঠন এগমন্ট গ্রুপের সদস্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে ৩য় পর্বের মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন প্রক্রিয়া সফলভাবে সমন্বয় করেন এতে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে কমপ্লায়েন্ট দেশের স্বীকৃতি অর্জন করে।

১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন তিনি। ৩৬ বছরের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি, অফসাইট সুপারভিশন, পরির্দশন, মুদ্রা নীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতি প্রণয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য। শিক্ষা জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এছড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে স্নাতোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

জাকির/আরএম