এমপিও’র দাবিতে ফের অবস্থান কর্মসূচি

ফাইল ছবি

২০১৮-১৯ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না রাখায় ফের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে রোববার (১০ জুন) সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জন্য মোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এরমধ্যে শিক্ষা খাতে মোট ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ২২ হাজার ৪৬৬ কোটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ২৪ হাজার ৮৮৮ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি।

এমপিওভুক্তিতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকায় আজকের কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে জানান নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মামুদুন্নবী ডলার।

তিনি বলেন, আমরা পূর্বে মন্ত্রীর আশ্বাসে আ্দোলন প্রত্যাহার করেছিলাম। কিন্তু বাজেটে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সুর্নির্দ্দিষ্ট কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই আবার আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এর আগেও একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন’ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে ৩১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তারা। কর্মসূচি পালনকালে গত ২ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষর্থীদের দাবির বিষয়টি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষকরা মন্ত্রীর কথায় আশ্বত হতে না পেরে আন্দোলন চালিয়ে যান। পরে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ সাজ্জাদুল হাসান ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। ওই দিনই শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করে বাড়ি ফিরে যান।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা। কিন্তু সরকারের আশ্বাসের পরও বাজেটে আমাদের জন্য বরাদ্দ না থাকায় আমরা হতাশ । তাই আজ থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১০ সালে সারা দেশের এক হাজার ৬০৯টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) এমপিওভুক্ত করা হয়। ওই সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা অর্জন করার পরও এমপিওভুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়ে। এর আগে ছয় বছরও এমপিওভুক্তি বন্ধ ছিল। সবমিলে গত ১৪ বছরে মাত্র দুইবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। তবে এই সময়ে সাত হাজার ১৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সব শর্ত পূরণ করেছে।

এমপিওভুক্তির দাবিতে ২০১৩ সালে প্রথম আন্দোলনে নামেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

রাসেল/