কক্সবাজারে কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা উদ্যোগ

কক্সবাজারে সামাজিক সংহতি জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ২০ হাজার ৫০০ কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা কর্মসূচি চালু করেছে জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

এই কর্মসূচির জন্য ‘সামাজিক কেন্দ্র’ (স্যোশাল হাব) গড়ে তোলার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে চলতি সপ্তাহে জামতলি ও শামলাপুরে দুটি কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। শিগগিরই আরও তিনটি সামাজিক কেন্দ্র চালু করা হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেন, ‘আমরা উদ্ভাবনী যেসব কাজ করতে পারি তার অন্যতম হচ্ছে কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের জন্যে বিনিয়োগ করা। দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনের সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা গড়ে তোলা, শান্তি প্রতিষ্ঠায় দক্ষতা, খেলাধুলা, বিনোদন এবং কিশোর-কিশোরী কেন্দ্রিক কর্মসূচির মতো উদ্ভাবনী উপায়ে তরুণদের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন তরুণেরাই পারে একটি ক্রমবর্ধমান সহনশীল ও সবার জন্যে বাসযোগ্য সমাজ গড়ে তোলায় অবদান রাখতে।’

পরবর্তী প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের ‘পরিবর্তনের দূত’ হিসেবে তাদের সম্প্রদায়ে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ৩৩ লাখ ইউরো প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই সামাজিক কেন্দ্রগুলো গড়ে তোলা হচ্ছে।

সামাজিক কেন্দ্র হচ্ছে এমন স্থান যেখানে তরুণ জনগোষ্ঠী সামাজিকতায় সম্পৃক্ত হতে পারে, নিজেদের দক্ষতা আরেকজনকে শেখাতে পারে, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংঘাতের সমাধান সম্পর্কে জানতে পারে এবং শিক্ষা ও বিনোদন সেবা পেতে পারে।

বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক বলেন, ‘একটি নিরাপদ, সহায়ক ও শিক্ষামূলক পরিবেশে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে আসা তরুণদের একত্রিত করতে পেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গর্বিত। আমরা সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে থাকা ব্যবধান কমিয়ে আনছি এবং হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ও সামাজিক সংহতির জন্য শক্ত ভিত্তি স্থাপন করছি।’

শিশু ও সম্প্রদায়গুলোকে প্রভাবিত করা সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে এবং এসব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে আলোচনা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের ১২ হাজারেরও বেশি বাবা-মা, কমিউনিটি ও ধর্মীয় নেতাদের কাছে যাওয়া হবে।

২০১৭ সালের আগস্টে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তা প্রদানে ইউনিসেফকে ২ কোটি ৫৬ লাখ ইউরো অর্থ সহায়তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় তাদের নিরাপদ পানি, পুষ্টি, শিক্ষা, শিশু সুরক্ষা এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতায় সহায়তা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

টোমো হোযুমি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউনিসেফের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়গুলোর কিশোর-কিশোরী ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদানে এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেই আমরা আশা করি।’ তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ