কথার ফুলঝুড়ি, নির্যাস নেই: মান্না

রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, সামাজিক সুযোগ, স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা একটি সরকারের মূল দায়িত্ব। কিন্তু এসব জায়গাতে বর্তমান সরকার সম্পূর্ন ব্যর্থ। সরকারী বক্তব্যে শুধু কথার ফুলঝুড়ি আছে কিন্তু কোনো নির্যাস নেই।

সোমবার ১৫ জানুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্যের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

মান্না বলেন, শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, শিল্পায়ন, কারিগরি উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন মানেই উন্নয়ন নয়। আমরা মনে করি মানুষকে সুখী করে তোলার প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।

মাহমুদুর রহমান বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এই সরকার অর্থনীতি, শিক্ষা, গুম, খুন, হত্যাকাণ্ড, বিচার ব্যবস্থা, জ্বালানী খাত, রোহিঙ্গা সমস্যা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই যখন সরকার গঠনের জন্য আবশ্যক ১৫১ জনের বেশি ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়ে যান তখন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যা হয়েছিল সেটা প্রহসনের চাইতে কম কিছু নয়।

সরকার দারিদ্র্যতা হ্রাসের কথা বললেও প্রকৃত চিত্র উল্টো। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে দারিদ্র্য হ্রাসের হার ছিল ১.৮ শতাংশ, যা ২০১০ থেকে ২০১৬ সালে নেমে এসেছে ১.২ শতাংশে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখা উচিত গত বছরের নভেম্বরের তথ্য অনুযায়ী দেশের খেলাপি ঋনের পরিমান ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায় বিদেশে।

নির্বাচনের আগে ঘরে ঘরে চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শুনেছিলাম আমরা । কিন্তু ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ দুই বছরে মাত্র ৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ প্রতি বছর দেশের কর্মবাজারে প্রবেশ করছে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ। এছাড়াও ২০০০-২০০৫ সালে দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৩ শতাংশ, এবং ২০১০-২০১৬ সালে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ১.৯ শতাংশ। শুধু তাই নয় দেশে গুম, খুন, অপহরণ, শিশু নির্যাতন ‍চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে ।

শিক্ষা ব্যবস্থায় নেমে এসেছে অভিশাপ। প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন যেন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের আমরণ অনশনের কথা বলাই বাহুল্য।

মান্না বলেন, এ সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন কৌশলে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং বিচার ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে ফেলা। সংসদীয় দলের অধীনে জাতীয় নির্বাচন পদ্ধতি পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। বাংলাদেশে সেরকম নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিন্তু এরকম নির্বাচন জাতির জন্য কল্যাণের হতে পারেনা। আমরা চাই সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করুক সরকার।

আজকের বাজার: এলকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৮