কালোবাজারীদের দখলে ট্রেনের টিকেট

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির তৃতীয় দিন বুধবার ১৪ জুন। এরইমধ্যে টিকেটের সিংহভাগ কালোবাজারীদের দখলে চলে গেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু হয়ে মাত্র ১০ মিনিটে শেষ হয়ে গেছে এসি টিকেট। ভোররাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও এসি ও কেবিনের টিকেট পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন টিকেট প্রত্যাশীরা। অগ্রিম টিকেট বিক্রির দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবারও একই অভিযোগ ছিল।

টিকেট প্রত্যাশীদের অভিযোগ, রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্ক্ষিত টিকেট মিলছে না। ৩ বা ৪ জনকে টিকেট দেওয়ার পর কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে এসি ও কেবিনের টিকেট শেষ। কালোবাজারীর সঙ্গে জড়িতদের কাছে ট্রেনের এসি ও কেবিনের টিকেট দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার ১৪ জুন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিনে দেখা গেছে, অগ্রিম টিকেটের প্রতিটি কাউন্টারে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন। প্রতিজনকে সর্বোচ্চ ৪টি করে টিকেট দেওয়া হচ্ছে। গত সোমবারের তুলনায় বুধবার কমলাপুর রেল স্টেশনে টিকেট প্রত্যাশীদের ভিড় অনেক বেশি। গতকালও অনেকটা একই ধরনের ভিড় ছিল।

কারওয়ান বাজার থেকে আসা মসলেম উদ্দিন বলেন, আজকের বিক্রির তালিকায় থাকা এসির বগির অগ্রিম টিকেটের জন্য গতকাল রাত ১০টায় স্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। সামনের দিকেই ছিলাম। কিন্তু টিকেট বিক্রি শুরুর মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই এসির সব টিকেট শেষ হয়ে গেছে। পরে চেয়ার কোচের টিকেট নিয়েছি।

কমলাপুর রেল স্টেশনে টিকেট প্রত্যাশীদের অধিকাংশের একই অভিযোগ। স্টেশনের ২৩টি কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা টিকেট প্রত্যাশীদের কাছে এসির টিকেট এখন সোনার হরিণ। তাদের অধিকাংশই পেয়েছেন সাধারণ টিকেট। গতকাল মঙ্গলবারও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গোপনে ট্রেনের কেবিন ও এসির টিকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা ফোন করে এসব টিকেট বরাদ্দ দিয়েছেন। অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কেবিন ও এসি টিকেট বুক করে রেখেছেন। নামমাত্র কয়েকটি টিকেট রাখা হয়েছে বিতরণের জন্য।

টিকেট কালোবাজারীর কথা অস্বীকার করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার শীতাংশু চক্রবর্তী জানান, অগ্রিম টিকেট বিক্রির জন্য নির্ধারিত কাউন্টারগুলোতে আজ ২৩ হাজার ৮১২টি টিকেট বিক্রির জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি, ভিআইপি এবং প্রতিবন্ধী কোটার জন্য ২৫ শতাংশ এবং অনলাইনে বিক্রির জন্য ২৫ শতাংশ টিকেট বরাদ্দ রয়েছে। এ জন্য এসি টিকেট কম পাওয়া গেছে। তবে কোনো ধরনের কালোবাজারী হয়নি। আগামী ২১ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ট্রেনে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। সাধারণত বাংলাদেশ রেলওয়ের দৈনিক ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৭০ হাজার। ঈদ যাত্রার অতিরিক্ত চাহিদার কথা বিবেচনা করে সাধারণ সময়ের চেয়ে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা দৈনিক ৩০ হাজার বাড়ানো হয়েছে।

আজকের বাজার: আরআর/ ১৪ জুন ২০১৭