কুমিল্লার চান্দিনায় সমলয় পদ্ধতিতে রোপা আমন চাষ

জেলার  চান্দিনায় সমলয় পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ। নতুন এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে শুরু করে রোপণ পর্যন্ত খুব কম খরচ হওয়ায় ব্যাপক লাভের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন চান্দিনার কৃষকেরা। আজ বেলা ১১ টায় উপজেলার ছায়কোট গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চান্দিনা উপজেলা কার্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।

কৃষকদের দাবি, নতুন পদ্ধতিতে আশানুরূপ ফসল ও বেশি লাভ হলে আগামীতে আমন চাষের বিপ্লব ঘটবে জেলায়।
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার চান্দিনা উপজেলার ছায়কোট গ্রামে শুরু হয়েছে সমলয় পদ্ধতিতে রোপা আমন চাষাবাদ। উপজেলায় এটাই প্রথমবারের মতো নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। জমিতে প্লাস্টিক ট্রেতে মাটি, জৈব সার মিশিয়ে বপন করা হয় আমনের বীজ। মাত্র ১৫-১৭ দিনের মধ্যে ধানের চারা রোপণের উপযুক্ত হয়। এরপর জমি থেকে প্ল্যাস্টিকের ট্রেসহ চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে দেওয়া হয়। শ্রমিক ছাড়াই কম সময়ের মধ্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে জমিতে রোপণ করা হয়।

ছায়কোট গ্রামের কৃষক রহমত উল্লাহ ও অহিদ মিয়া বাসসকে বলেন, তারা আগে সনাতন পদ্ধতিতে রোপা আমনের চাষ করতেন। এবারই প্রথমবারের মতো সমলয় পদ্ধতিতে রোপা আমন চাষ শুরু করেছেন। সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত একর প্রতি খরচ হতো প্রায় ৪৫-৫০ হাজার টাকা। এখন নতুন পদ্ধতিতে খরচ হবে মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা। কৃষক আবু জাফর বলেন, আমরা আগে সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে রোপণের উপযুক্ত হতে ২৫-৩০ দিন লাগতো। এখন সমলয় পদ্ধতিতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন। আগের পদ্ধতিতে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতে হতো। তখন শ্রমিকের ব্যাপক সংকট ছিল। সময়মতো শ্রমিক না পাওয়ায় রোপণও সময়মতো করতে পারতাম না। এখন এ পদ্ধতিতে শ্রমিক ছাড়াই রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ধানের চারা রোপণ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আগে আমন চাষ করতে গিয়ে ব্যাপক খরচ হতো। ধানের বাজার বেশি হলে মোটামুটি লাভ পেতাম। এবার মেশিনে চাষ করার কারণে খরচও কম। তাই ধানের বাজার কম হলেও ভালো লাভবান হবো। আমি এবার ২ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে আমন চাষ করেছি। ফলন ও লাভ ভালো হলে আগামী বছর ৫-১০ একর জমিতে চাষ করবো।

চান্দিনা উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বাসসকে বলেন, এ পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় করতে পারলে কৃষি খাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমলয় হবে অন্যতম মাধ্যম।

সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বকসী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল, চান্দিনা পৌরসভার মেয়র মো. শওকত হোসেন ভূঁইয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া আক্তার, চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন খাঁন, চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মফিজুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মনির আহাম্মদ, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মো. মনির খন্দকার, কৃষক মো. ফয়েজ আহমেদ প্রমুখ। (বাসস)