কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবার সদিচ্ছা থাকা দরকার: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেছেন, কোচিং বাণিজ্য এমন একটি বিষয় যা সুইচ টিপে বন্ধ করা যায় না। এর সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের অসংখ্য মানুষ জড়িত। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের যেমন সদিচ্ছা রয়েছে, তেমনি সংশ্লিষ্ট সবার সদিচ্ছা থাকলে এটি বন্ধ করা যাবে।

রোববার সিলেটের সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে বিভাগের চার জেলায় মিড ডে মিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং পুরোটা বন্ধ করে দেয়ার বিষয় নয়। সারাবিশ্বে কোচিং রয়েছে। কিন্তু যেখানে কোনো শিক্ষক যদি বিদ্যালয়ে ক্লাস না করিয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোচিং করায়, সেই বাণিজ্যিক অংশটুকু বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে শিক্ষা বিশাল ভূমিকা পালন করছে।

শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বিকাশে তাদের ক্ষুধামুক্ত রাখতে হবে উল্লেখ করে দিপু মনি বলেন, তাদের পুষ্টির যেন অভাব না হয়। সেই চিন্তা থেকেই সারাদেশে মিড ডে মিল কর্মসূচি শুরুর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর সিলেটে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। সিলেট বিভাগের ৬২২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আওতায় ২ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং ১৮টি উপজেলার শতভাগ প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া যেগুলো বাকি রয়েছে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।

মিড ডে মিলের অর্থের যোগান প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকরা এখন শিক্ষার্থীদের টিফিনের জন্য কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাসা থেকে খাবার বানিয়ে দিচ্ছেন। তাতেও কিছু টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু আরো একটু বাড়িয়ে দিয়ে সহযোগিতা করলে একসঙ্গে সব শিক্ষার্থী খাবার খেতে পারবে। এক্ষেত্রে ১০-১৫ টাকা খরচ হবে। তাদের পুষ্টিও নিশ্চিত হবে। সব অভিভবাকদের সম্মতিতেই এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকরা এটি বাস্তবায়ন করবেন।

সিলেটে শিক্ষক স্বল্পতা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষক নিয়োগের যে প্রক্রিয়া রয়েছে সেটি এনটিআরসি’র মাধ্যমে খুব জোরেশোরে চালু আছে। আগামীতে আর শিক্ষক সঙ্কট থাকবে না।

ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সামাজিক আলাপ-আলোচনা করে আগাতে হবে। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমপিওভূক্তির সম্পূর্ণ তালিকা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যাচাই-বাছাই চলছে। কারণ এরমধ্যে কোনো ভুল থকারা সুযোগ নেই। সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি যেন নির্ভুল হয়। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির মধ্য দিয়ে অচিরেই সেটি প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এ সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে প্রক্রিয়াধীন ছিল। সেটির রায়ও হয়েছে। সে মোতাবেক কাজ করা হবে।

এর আগে দুপুর একটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের চার জেলায় মিড ডে মিল চাল করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশি শাহাবুদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আজকের বাজার/এমএইচ