ক্ষমতায় টিকে থাকার দেনদরবার করতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: রিজভী

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘কলকাতার গণমাধ্যমের খবরে এটা পরিষ্কার শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থে ভারত যাননি, তিস্তার পানির জন্য যাননি, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে যাননি। তিনি গেলেন ক্ষমতায় টিকে থাকার দেনদরবার করতে।’

রোববার (২৭ মে) দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সরকারি অর্থ ব্যয় করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের কাছে আকুতি জানাতে সেখানে সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে স্বার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে ট্রানজিটসহ ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দিয়েছে তাঁর সরকার। কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। তবে প্রতিদান হিসেবে ক্ষমতা ধরে রাখতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। এসব আমাদের কথা নয় সেদেশের প্রভাবশালী গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন ট্রানজিটসহ সব দিয়েছে তাঁর সরকার, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবর দিল্লির পাশে থেকেছে। বাংলাদেশের নির্বাচনের বছরে এবার তাই ভারতের সহযোগিতা চাই।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিদেশিদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। নিজ দেশের জনগণকে বাদ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এখন মুরুব্বিদের কাছে দেনদরবার শুরু করেছেন। কারণ শেখ হাসিনা বুঝতে পেরেছেন তাঁদের দুঃশাসনের জবাব দিতে মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে। তাঁর বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। গণতন্ত্র হত্যা করে, দেশের বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করে বন্দুকের জোরে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না।’

রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে শেখ হাসিনা এখন তাঁর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে আটকে রেখেছেন। তাঁকে অস্বাস্থ্যকর, জরাজীর্ণ, অবাসযোগ্য কারাকক্ষের মধ্যে আটকে রাখার পরও প্রধানমন্ত্রী এবার একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের মনোবাসনা পূরণে নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই তাদের চিরাচরিত আশ্রয়স্থল ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন। বর্তমান সরকার আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা নির্বাচন করে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এই উদ্দেশ্যে অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে যেখানেই গেছেন সেখানেই ব্যর্থ হয়েছেন।’

বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং সব দলের অংশগ্রহণে। অবশ্যই সেটি হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে না। তাঁর নেতৃত্বেই বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরশাসককে টিকিয়ে রাখতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ সেটা বিশ্বাস করতে চায় না।’

আরজেড/