খাসোগি হত্যাকাণ্ড: ৩ মাস পর সৌদির শীর্ষস্থানীয় পদে ব্যাপক পরিবর্তনের নির্দেশ

সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির আলোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন মাস পর আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সরকারি পদে ব্যাপক পরিবর্তন করেছেন বাদশাহ সালমান।

এর মধ্যে রয়েছে সৌদির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ঘোষণা।

এছাড়া তিনি দেশের নিরাপত্তা বিষয়গুলো তদারকি করা সুপ্রিম কাউন্সিলের পরিবর্তনের আদেশ দেন। যার নেতৃত্বে রয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তিনি উপ প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। তবে এই পদে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

পরিবর্তনগুলোতে যুবরাজের ঘনিষ্ঠদের প্রধান উপদেষ্টা এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সালমানের ক্ষমতা আরও সুদৃঢ় করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

‘ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর খাসোগি হত্যার জন্য যুবরাজ দায়ী বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে,’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে এমন রেজ্যুলেশন পাস হওয়ার পর এসব পরিবর্তন আনা হলো।

যদিও খাসোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত নন এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে বোঝানোর জন্য চেষ্টা করেছেন সৌদি যুবরাজ। এরই প্রেক্ষিতে মৃদুভাষী আদেল আল-জুবায়েরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয় এবং দীর্ঘকালের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইব্রাহীম আল-আসাফকে তার স্থলে বসানো হয়।

বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মুসায়েদ আল-আইবান, সাবেক গণমাধ্যম মন্ত্রী আওয়াদ আল-আওয়াদকে রয়্যাল কোর্টের উপদেষ্টা, জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান হিসেবে খালিদ আল-হারবির নিয়োগ দেয়া। তারা সকলেই যুবরাজের সহযোগী।

এছাড়া সালমানের ঘনিষ্ট বন্ধু তুর্কি আল-শেখকে খেলাধুলা কর্তৃপক্ষের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার স্থলে যুবরাজ আব্দুল আজিজ বিন তুর্কি আল-ফয়সালকে নেয়া হয়েছে।

বাদশাহর বড় ছেলে যুবরাজ সুলতান বিন সালমানকে পর্যটন কর্তৃপক্ষের প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি দেশের নতুন জাতীয় মহাকাশ সংস্থাকে নেতৃত্ব দেবেন। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম আরব এবং মুসলিম নভোচারী হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেন।

যু্বরাজ আবদুল্লাহ বিন বান্দারকে ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান করা হয়েছিল। ওই বাহিনী প্রধানত ক্ষমতাসীন আল সৌদ পরিবারের সুরক্ষা দেয়ার কাজ করে। যুবরাজ আবদুল্লাহ মক্কার ডেপুটি গভর্নর ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট এবং সৌদি যুবরাজের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার আন্তর্জাতিক বিশ্বের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি সরকার। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ