চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা বন্ধ

চট্টগ্রামের বিতর্কিত ম্যাক্স হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করায় নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসাসেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মালিক সমিতি।

রোববার (৮ জুলাই) নগরীর বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভা থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্ব অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় হাসপাতালটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানে সহযোগিতা করেন ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি ডা. দেওয়ান মো. মেহেদি হাসান, চট্টগ্রাম ওষুধ প্রশাসন তত্ত্বাবধায়ক গুলশান জাহানসহ র‌্যাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযানে ত্রুটিপূর্ণ লাইসেন্স অদক্ষ-অনভিজ্ঞ ডাক্তার-নার্স দ্বারা পরিচালনার বেশকিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অভিযান সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন রোগের ডায়াগনোসিস ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করে মর্মে প্রচার হলেও মূলত তারা প্যাথলজিক্যাল টেস্টগুলো করে আনে পপুলার থেকে। পরে ম্যাক্সের প্যাডে তা প্রচার করে। প্রাথমিকভাবে এ ধরনের বিভিন্ন অনিয়ম ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখে ধরা পড়েছে। এছাড়া বিদেশি ওষুধ রাখলেও সেগুলোর কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, নগরীর বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ক্লিনিকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবাও বন্ধ থাকবে।’

তবে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়া অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মালিক সমিতির এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম জেলা শাখা।

উল্লেখ, গত ২৮ জুন বিকেলে গলা ব্যাথার কারণে দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী কণ্যা রাইফাকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৯ জুন রাতে রাইফার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

এই ঘটনায় ওই দিন রাতে ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তি দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা। এসময় সাংবাদিক নেতাদের দাবি মুখে পুলিশ কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিএমএ নেতাদের চাপের মুখে ওই রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরএম/