চলে যা, না হলে মেরে ফেলব

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ড. মুবাশ্বার হাসান সিজারকে অপহরণের পর তার কাছ থেকে টাকা চেয়েছিল অপহরণকারীরা। শুক্রবার সকালে রাজধানী বনশ্রীর বাসার নিচে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। সিজার বলেন, ‘ওরা আমাকে বলেছিল, তুই তো অনেক জায়গায় কাজ করিস। তুই টাকা দে।’তিনি বলেন, ‘সে সময় আমার কাছে নগদ ২৭ হাজার টাকা ছিল, ওরা নিয়ে নিয়েছে। তারা বলেছিল টাকা পয়সার বিষয়টা তোর পরিবার ও কোনো বন্ধু-বান্ধবীকে জানা। তোর কোনো টাকা পয়সাওয়ালা বন্ধু-বান্ধবী আছে কিনা তাকে ফোন দে।’
ফিরে আসার বিষয়ে সিজার বলেন, ‘গতরাতে (বৃহস্পতিবার) আমাকে একটি গাড়ির মধ্যে বসানো হয়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর আমাকে বিমানবন্দর এলাকায় নামিয়ে দিয়ে বলে তুই চলে যা, নয়তো মেরে ফেলব।’
তিনি বলেন, ‘নামার পর বিমানবন্দর এলাকা থেকে সিএনজি নিয়ে বাসায় আসি। সিএনজি চালকের মোবাইল থেকে আব্বাকে ফোন দেই। আব্বা এসে ভাড়া দিয়ে আমাকে বাসায় নিয়ে যান।’ নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ এক মাস ১৪ দিন পর বৃহস্পতিবার দিনগত রাত একটার দিকে দক্ষিণ বনশ্রীর বাসায় ফেরেন সিজার।
সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন জানান, ‘রাতে কে বা কারা সিজারকে বিমানবন্দর এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে সেখান থেকে সিএনজি করে সে বাড়ি আসে।’
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে সরকারের এটুআই প্রকল্পের একটি সভায় অংশ নিতে যান সিজার। সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। ওইদিনই গভীর রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সিজারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন।
জিডিতে বলা হয়, ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার বাসা থেকে বেরিয়ে সিজার তার কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। নিয়মিত কাজ শেষ করে বিকেলে তিনি বের হয়ে যান। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতক সিজার এক সময় সাংবাদিকতাও করেছেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করেন। সিজার সম্প্রতি সমাজে জঙ্গিবাদের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করছিলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া তিনি আলোচনা ডটকম নামে একটি সাময়িকীর সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
আজকের বাজার: সালি / ২২ ডিসেম্বর ২০১৭