ছেলেকে দলত্যাগ করতে বললেন ওজিলের বাবা

গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল জার্মানির দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে লজ্জাজনক হারে গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে বিদায় নেয়াটা এখনও মেনে নিতে পারছেন দেশটির সমর্থক ও সাবেক ফুটবলাররা।

উল্লেখ্য, দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ওজিল ও গুন্দোগানকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় বিশ্বকাপ শুরুর দিক থেকেই।

এভাবে শেষ ষোলোতে কোয়ালিফাই না করতে পারার সব ব্যর্থতা তারা দিচ্ছেন দলের সেরা খেলোয়াড় মেসুত ওজিলের ওপর। প্রতিদিনই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ছেন এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।

গত মাসের শুরুর দিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জার্মান দলের তুর্কি বংশোদ্ভূত জনপ্রিয় ফুটবলার মেসুত ওজিল ও ইকাই গুন্দোগান। এরদোগানের সঙ্গে তারা ছবিও তোলেন।

এ ঘটনার পর ওজিলবিরোধী হয়ে পড়েন দেশটির অনেক সমর্থকসহ দলের কর্মকর্তারা।

ওজিল ও গুন্দোগানকে বিশ্বকাপে না খেলানোর কথাও তোলা হয় জার্মান গণমাধ্যমে। ওজিল ও গুন্দোগান তুরস্কের বংশোদ্ভূত বলে তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

গ্রুপপর্বের খেলায় মেক্সিকোর জালে ওজিলরা কোনো বল জড়াতে না পারায় কথাটি আবার আলোচনায় আসে।

সেই সময় জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথিউসসহ অনেকেই মন্তব্য করেছেন, জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ওজিল গলা মেলায় না। ওজিল হৃদয় দিয়ে খেলে না। জার্মানিদের প্রতি ওজিলের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

এ বিষয়ে এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল না বলে গুন্দোগান তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও আপত্তি ও সমালোচনা থেমে থাকেনি।

জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফবি) প্রেসিডেন্ট গ্রিন্ডেল বলেন, বিষয়টি সেখানেই চুকে যায়নি। এ নিয়ে ওজিলকে অবশ্যই ব্যাখ্যা দিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার জার্মান ফুটবল দলের কর্তা অলিভার বিয়াহফ বলেন, বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ও এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের বিষয়টি খোলাসা না করায় ওজিলকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত।

এ বক্তব্য শোনার পর ওজিলের বাবা মুস্তাফা ওজিল এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এটি অপমানজনক। নিজের ওকালতি নিজেই করার মতো বিষয় হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওজিল কেবল সৌজন্যবোধে ছবি তুলেছে। এটিকে রাজনীতিকরণ করার কোনো অবকাশ নেই।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ওজিল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে খেলেছে। গত ৯ বছর ধরে ও জার্মান ফুটবল দলকে অনেক দিয়েছে। যখন জয় আসে সেটার কৃতিত্ব সবার; কিন্তু যখন পরাজয় আসে, তখন একা কেন আমার ছেলের ওপর তা বর্তাবে!

আমি স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি- ওজিলকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হচ্ছে। এখন ওজিলকেই তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে তার জায়গায় আমি থাকলে ধন্যবাদ জানিয়ে দল থেকে বিদায় নিতাম।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে মেসুত ওজিলের সাক্ষাতের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি)। ডিএফবি প্রেসিডেন্ট রেইনহার্ড গ্রিন্ডেল বলেন, এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাখ্যা দিতেই হবে ওজিলকে। এর ওপর ভিত্তি করেই তার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আজকের বাজার/আরআইএস