জনগণকে ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার ভূমিকা জাতিসংঘে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ

জাতিসংঘ নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন উল্লেখ করেছেন যে সকলের জন্য সম্মানজনক কাজ নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়নে জোর দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে। গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে জনগণকে ক্ষমতায়িত করা এবং সমতা ও সামগ্রিকতা নিশ্চিত করার মুখ্য নিয়ামক হিসেবে সকলের জন্য সম্মানজনক কাজ নিশ্চিতে জোর দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।’

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘কাজের ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এ কথা বলেন তিনি। খবর ইউএনবি।

বাংলাদেশের শ্রম আইনের মূলনীতি তুলে ধরে মোমেন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত এবং সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা আমাদের জাতীয় শ্রমনীতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। কাজের অনানুষ্ঠানিকতা হ্রাস, ভালো মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমরা আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি ও পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছে এবং নারী, প্রতিবন্ধী, অরক্ষিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজের অধিক সুযোগ সৃষ্টিতেও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

‘শেখ হাসিনা সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় দশ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একশ’ নতুন বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে। পাশাপাশি সরকার এসএমই খাতকেও উৎসাহিত করছে, যাতে বিশেষ করে নারী ও যুবকদের জন্য সম্মানজনক কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়,’ যোগ করেন তিনি।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির ভবিষ্যৎ প্লাটফর্ম হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন মোমেন।

চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের চ্যালেঞ্জসমূহ দুর্বল অর্থনীতির দেশ এবং যে সকল দেশে কাঠামোগত রূপান্তর চলছে সেসকল দেশগুলোর কাজের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ন্যায় ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কিভাবে প্রযুক্তিকে উন্নয়নের মূলশক্তি হিসেবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে সদস্য দেশসমূহের সরকার, মালিক, ট্রেড ইউনিয়ন এবং নেতৃত্বদানকারী কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আইএলও আলোচনা সাপেক্ষে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করতে পারে।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মারিয়া ফার্নান্দা এস্পিনোসা গার্সেজ আইএলও এর শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষায়িত এই সভা আহ্বান করেন।

বিশেষায়িত এই সভায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এবং আইএলও এর মহাপরিচালক গাই রাইডার বক্তব্য রাখেন।

এতে সদস্য দেশসমূহের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নের ও মালিক সমিতির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তাগণ বিশ্বে সামাজিক ন্যায় বিচার সৃষ্টির ক্ষেত্রে আইএলও’র ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

আইএলও এর শতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানটি গত ১০ এপ্রিল শুরু হয়ে ১১ এপ্রিল শেষ হয়।

আজকের বাজার/এমএইচ