জয়পুরহাটে সূর্যমূখী চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা

উন্নত মানের পুষ্ঠি সমৃদ্ধ তেল জাতীয় ফসল সূর্যমুখী চাষের ব্যাপক
সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরাঞ্চলের  কৃষি উৎপাদনে উদ্বৃত্ত  জেলা  জয়পুরহাটে। প্রদর্শনী প্লট গুলো সুর্যমূখী  ফুলে এখন ঝলমল করছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলায় চলতি ২০২৩-২৪ ফসল চাষ মৌসুমে ক্ষেতলাল উপজেলায় নিশ্চিন্তা ও নওটিকা গ্রামের তিনজন কৃষক কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানে প্রদর্শনী হিসেবে এবার ১৫০ বিঘা  জমিতে কাভেরী জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন।  এর মধ্যে রয়েছে নওটিকা গ্রামের রুপ কুমার ৫০ শতক, দীলপি কুমার ৫০ শতক ও নিশ্চিন্তা গ্রামের কৃষক ফরহাদ ৫০ শতক জমিতে এবার কাভেরী জাতের প্রদর্শনী  হিসেবে সূর্যমুখী চাষ করেছেন।
ক্ষেতলাল  উপজেলা  কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান,  দেশের বিভিন্ন জেলায় সূর্যমূখীর চাষ হলেও মাটির গুণাগুণ ও আবহাওয়া উপযোগী বিবেচনায়  জয়পুরহাটেও  সূর্যমুখী চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।  সূর্যমুখীর বীজে শতকরা ৪০-৪৫ ভাগ উপকারী লিনোলিক এসিড রয়েছে এবং ক্ষতিকর কোন ইরোসিক এসিড থাকে না। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখী তেল খুবই উপকারী বলে জানান তিনি।
কৃষি বিভাগ জানায়, ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে সূর্যমুখীর  চাষ শুরু হয়। সারা বছর সূর্যমুখীর চাষ করা গেলেও অগ্রহায়ণ মাসে অর্থাৎ নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর জন্য জমি গভীর ভাবে চাষ দিতে হয়। ৪/৫ বার আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝরঝরে করে নিতে হয়।  দেশে   কিরণী (ডিএস-১) ও বারি সূর্যমুখী-২ জাত থাকলেও এবার উচ্চ ফলন সমৃদ্ধ কাভেরী জাতের সূর্যমুখী চাষের জন্য ১৫০ বিঘা জমিতে প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়েছে।  জাতটি অলটারনারিয়া ব্রাইট রোগ সহনীয়। ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।  সূর্যমুখীর বীজ সারিতে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সেন্টিমিটার এবং সারিতে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার  নিশ্চিন্তা  গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন, নওটিকা গ্রামের রুপ কুমার ও দীলিপ কুমার এবার ৫০ শতক করে ১৫০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বীজ বপণ করে  ৩৭ দিনের মাথায় জমিতে থাকা সূর্যমুখীর চারা গুলো ঝলমল করছে। ইতোমধ্যে চারার মাথায় মাথায় ব্যাপক হারে ফুল আসতে শুরু করেছে।  ভালো ফলন পাবেন এমন আশার কথা জানান কৃষকরা। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের সব রকম প্রযুক্তিগত পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান, ক্ষেতলাল  উপজেলা  কৃষি কর্মকর্তা  জাহিদুল ইসলাম। (বাসস)