জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

অবশেষে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার ০৪ আগস্ট এক ঘোষণায় দেশটি বলেছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহারে জাতিসংঘে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়ে শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র একটি ভারসাম্যপূর্ণ জলবায়ু নীতি চায় যার মধ্য দিয়ে কার্বন নির্গমন কমানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রথমবারের মতো লিখিতভাবে জাতিসংঘকে জানাল যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে প্রতীকী হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ চুক্তির নিয়ম অনুসারে কোনো সদস্য দেশই ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বরের আগে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারবে না।

চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ওই সময়ের পরও বছরখানেক লেগে যাবে। এতে করে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া শেষ হবে না। পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত কোনো প্রেসিডেন্ট চাইলেই ফের চুক্তিতে যোগদান করতে পারবেন।

গত জুন মাসে হোয়াইট হাউজে দেওয়া এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করবেন। অবশ্য নির্বাচনের আগে থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যু নিয়ে সর্বজনগ্রাহ্য তত্ত্বটি নিয়ে সন্দেহের কথাটি নানাভাবে বলে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার যুক্তি, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘শাস্তি’ দিচ্ছে এবং লাখ লাখ মানুষকে চাকুরিচ্যুত করছে।

প্রসঙ্গত, প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিসের ‘কপ-২১’ জলবায়ু চুক্তিতে আমেরিকাসহ আরো ১৮৭টি দেশ মিলে অঙ্গীকার করেছিল যে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা তারা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখবে; এমনকি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে চেষ্টা করবে।

এ ব্যাপারে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশ—এ কথা মাথায় রেখেই ওবামা প্রশাসন এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, প্যারিস চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ২০০৫ সালের তুলনায় ৩৭ শতাংশ কমিয়ে আনবে।

আজকের বাজার: আরআর/ ০৫ আগস্ট ২০১৭