জাবিতে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ শীর্ষক সেমিনার

জাহাঙ্গরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধে দশ জেলায় গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলণী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের যৌথ আয়োজনে এ সেমিনার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

সেমিনারে গবেষকরা জানান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দশ জেলায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। নির্যাতন কেন্দ্র ছিলো ৩৩৯ টি। বর্তমানে এই দশ জেলায় মোট ৪০৮ টি বধ্যভূমি, ৩০২ টি গণকবর রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের তত্ত্বাবধানে নীলফামারী, বগুড়া, নাটোর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, ভোলা ও খুলনা জেলার উপর গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানান গবেষকরা।

অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন,  গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর  জরিপের যে কাজ চলছে তা খুবই প্রশংসার দাবি রাখে। আর এই সেমিনার তা আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীদের সাথে একটা পুরো বাংলাদেশ বন্দি ছিলো। আবদ্ধ ছিলো নারীসমাজ। কেউ পার পেয়েছে, কেউ পায়নি।

সেমিনারে গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও বিপক্ষের শক্তি রয়েছে। অথচ এমন হবার কথা ছিলো যেখানে সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকবে। পৃথিবীতে এমন নজির খুবই কম।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এমন পরিবার খুবই কম ছিলো যে পরিবারের কেউ না কেউ নির্যাতিত হয়নি। আজও পত্রিকার পাতা খুললে দেখতে পাই তার প্রমাণ।

তিনি আরও বলেন, আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও যারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে নিয়ে প্রশ্ন তোলে, ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজকে বিভক্ত করে, নারীদেরকে অবমাননা করে তাদেরকে ‘হারামজাদা’ বলাটা দোষের কিছু না।

তিনি বলেন, ভারতীয় শরনার্থী শিবিরে কত মানুষ মারা গেছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। বিভিন্ন এলাকায় অন্যান্য এলাকা থেকে এসে যারা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন তাদেরও কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

সেমিনারে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক খালিদ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক আরিফা সুলতানা, অধ্যাপক আব্দুল্লাহেল ক্বাফি, সহযোগী অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী, আনিছা পারভীন জলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নাঈম/আরএম