জামিন হয়নি ওসি মোয়াজ্জেমের

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হাইকোর্টে গিয়েও জামিন পাননি ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটি ৪০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে এই সময়ের মধ্যে প্রসিকিউশনের কারণে মামলা নিষ্পত্তি না হলে তখন তার জামিন আবেদন বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন। মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও রানা কাওসার। আর জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন।

ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত ১৭ জুলাই সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এর বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান তিনি। এরপর ২৭ অগাস্ট হাইকোর্ট ওসি মোয়াজ্জেমের করা আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে ১৩ অক্টোবর শুনানির জন্য রাখে।

সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ অক্টোবর জামিন শুনানি শেষে আদালত বিষয়টি রোববার আদেশের জন্য রেখেছিল। নুসরাত গত মার্চ মাসে তার মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ করলে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন।

তার কয়েক দিনের মাথায় মাদরাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওসির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সারাদেশে আলোচনার মধ্যে নুসরাতের সেই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

নুসরাতের মৃত্যুর পর গত ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী সৈযয়দ সায়েদুল হক সুমন। তদন্ত করে পিবিআই জানায়, নুসরাতের জবানবন্দি ভিডিও করে ওসি মোয়াজ্জেম যে তা ছড়িয়ে দিয়েছেন, তদন্তে সেই প্রমাণ মিলেছে।

এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে গত ১৬ জুন গোপনে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন ওসি মোয়াজ্জেম। আদালত পরদিন অর্থাৎ ১৭ জুন আবেদনটি শুনানির জন্য রাখলেও ওই দিনই সুপ্রিম কোর্ট এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মোয়াজ্জেমকে ১৭ জুন সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে ওই দিন আদালত তার জমিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

আজকের বাজার/এমএইচ