জয়পুরহাটে রাজহাঁস পালন করে ভাগ্য ফিরেছে মশিউরের

রাজহাঁস পালন ভাগ্য খুলে দিয়েছে জেলার প্রত্যন্ত এলাকা পাঁচবিবি উপজেলার ডুগুরপাড়া গ্রামের মশিউর রহমানের। ১৫ টি রাজহাঁস দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে মশিউরের খামারে রয়েছে ১২৬ টি রাজহাঁস। রাজহাঁস পালনে সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গরু, ছাগল ও দেশীয় হাঁস-মুরগির খামার চোখে পড়লেও রাজহাঁসের খামার তেমন দেখা যায়না। শখ থেকে রাজহাঁসের ১৫ টি বাচ্চা নিয়ে লালন পালন শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১২৬ টি রাজহাঁজ। যার বাজার মূল্য বর্তমানে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। লেখা পড়া শেষ করে চাকরীর পেছনে না ঘুরে রাজহাঁস পালনে স্থানীয় বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাকস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা গ্রহণ করে মশিউর রহমান। তিনি জানান, রাজহাঁসের ১৫ টি বাচ্চা কেনা ও মাচা তৈরির জন্য খরচ পড়ে ১২ হাজার টাকা। বাচ্চা লালন পালনে চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করে জাকস ফাউন্ডেশনের প্রাণি সম্পদ বিভাগ। আগ্রহ আর কঠোর পরিশ্রম মশিউর রহমানকে এনে দিয়েছে সফলতা। ১৫ মাসের পরিশ্রমে মশিউরের খামারে এখন ১২৬ টি রাজহাঁস। খামার দেখার জন্য লোকজন আসেন বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাজহাঁস পালনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক হ্যাচারী গড়ে তুলেছেন মশিউর। সাধারণ ভাবে ডিম থেকে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বাচ্চা তোলা সম্ভব হলেও প্রাকৃতিক হ্যাচারীতে ৯০ ভাগ বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব হয়। প্রাকৃতিক হ্যাচারীর ক্ষেত্রে হ্যাচিং ট্রেতে পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা থাকায় ডিমে ’তা’ দেওয়া রাজহাঁস পর্যাপ্ত এনার্জি ও পুষ্টি পায়।

ফলে ডিম থেকে বারবার উঠতে হয়না এবং ডিমে ’তা’ দেওয়া অব্যাহত থাকে। মূলত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে রাজহাঁস ডিম দিয়ে থাকে। একেকটি রাজহাঁস বছরে ২ বারে ১৬ থেকে ১৮টি ডিম দেয়। প্রথমবারে ৮-১০ টি ডিম দিলেও দ্বিতীয় বারে দেয় ৬-৭ টি ডিম। মাঝখানে একমাস ডিম দেওয়া বন্ধ থাকে। প্রতিটি ডিমের ওজন ১২০ থেকে ১৬০ গ্রাম করে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়ণে মশিউরের খামারে রাজহাঁস পালনে কারিগরি সহায়তা করছে স্থানীয় বে-সরকারি সংস্থা ’জাকস ফাউন্ডেশন’। মশিউর রহমান জানান, জাকস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ১৫টি রাজহাঁস দিয়ে শুরু করেন ছোট্ট খামার। বর্তমানে তার খামারে ১২৬টি রাজহাঁস রয়েছে। শুরুতে ১৫টি রাজহাঁসসহ ঘর মেরামত ও মাচা তৈরিতে মোট খরচ পড়ে প্রায় ১২ হাজার টাকা। আগ্রহ, কঠোর পরিশ্রমের ফলে দীর্ঘ ১৫ মাস পরে বর্তমানে তার খামারে মোট রাজহাঁসের সংখ্যা হচ্ছে ১২৬টি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বলে জানান মশিউর রহমান। প্রতিবেশী মন্টু মিয়া, বদিয়ার রহমান ও রোজিনা জানান, রাজহাঁস গুলো এক সঙ্গে বের হওয়ার সময় দেখতে সুন্দর লাগে তখন মন আনন্দে ভরে ওঠে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ডুগুরপাড়ায় মশিউরের খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজহাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন অনেকেই। জাকস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: নূরুল আমিন বলেন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় কারিগরি সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে উদ্যোক্তা তৈরিতে। এতে করে গ্রাম এখন শহরে পরিণত হচ্ছে। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান