তুরাগ বাসে যৌন হয়রানি: আসছে কঠোর কর্মসূচি

রাজধানীর বাড্ডা রোডে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় কঠোর কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীদের বেধে দেয়া সময় পার হলেও দোষী চালক ও হেলপার গ্রেফতার না হওয়ায় নতুন আন্দোলন কর্মসূচি নিতে যাচ্ছেন তারা।

উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্র আল আমিন  বলেন, আমাদের বোনকে নির্যাতন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছিলাম। পুলিশ ও বাস মালিক কর্তৃপক্ষ বলেছিলো আজ (সোমবার) সকালের ভেতর দোষীদের খুজে বের করা হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। তাই আমরা নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হচ্ছি। নতুন কর্মসূচি আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।

এদিকে গতকাল বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর স্বামী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০/৩০ ধারায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তুরাগ পরিবহনের ওই বাসের অজ্ঞাত চালক ও হেলপারসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নং ২৬।

গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দীক জানান, গতকালই (রোববার) মামলা নেয়া হয়েছে। মামলায় আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। সনাক্ত হলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

উত্তরা ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র আকরাম হোসেন জানান, তাদের সহপাঠী শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে উত্তরা যাওয়ার জন্য বাড্ডা লিংক রোড থেকে তুরাগ বাসে ওঠেন। তিনি মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত আসনেই বসেছিলেন। তখন বাসে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। তাদের মধ্যে যারা নেমে যান, তাদের বদলে কাউকে বাসে নতুন করে না তোলায় সন্দেহ হয় ওই তরুণীর। আর বাসটি যখন প্রায় খালি হয়ে যায় তখন চালকের সহকারী ওই তরুণীকে বাসের পেছনের আসনে গিয়ে বসতে বলেন। এ সময় বাসের আরকেজন সহকারী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী যেন না উঠে সেটা নিশ্চিত করছিলেন। বসুন্ধরা এলাকায় এটা দেখে ওই তরুণীর সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। তখন তিনি দরজার কাছে গিয়ে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু চালকের সহকারী ‘কই যান’ বলে তার হাত চেপে ধরেন। আর আরেকজন গেইট লাগাতে শুরু করেন। এ সময় সজোরে দুই সহকারীকে ধাক্কা দিয়ে মেয়েটি চলন্ত বাস থেকে নেমে পড়েন। তারপর অন্য বাসে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে ঘটনা খুলে বলেন সহপাঠীদের।

পরবর্তীতে সহপাঠীরা ওই বাসের হেলপার কনট্রাক্টরকে আটকের দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন করে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা তুরাগ পরিবহনের অর্ধশত বাস আটকে চাবি নিয়ে নেয়।

ওই ছাত্রীর এক সহপাঠী আশিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত চারক ও হেলপারকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

আজকের বাজার/একেএ