তেলের চাহিদা কমেছে ৩০ শতাংশ

যে তেলের জন্য একের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ দেখেছে বিশ্ব, সে তেলই এখন মিলছে অনেকটা বিনে পয়সায়! এমনকি প্রণোদনা দেয়ার পরও তেল কিনতে চাচ্ছে না কেউ। বিশ্লেষকদের শঙ্কা, আরও ৩/৪ মাস আন্তর্জাতিক বাজারে বজায় থাকবে নজিরবিহীন এ মন্দা। মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি না হলে, আরও দীর্ঘ হবে দু:সময়। এতে ভয়াবহ সংকটে পড়বে তেলনির্ভর অর্থনীতিগুলো।

করোনা সতর্কতায় লকডাউনের মধ্যে এখন স্থবিরতা বিশ্বের সবকিছুতেই। তাতেই তলানিতে নেমেছে জ্বালানি তেলের চাহিদা। পরিসংখ্যান বলছে, গেল বছরের তুলনায় তেলের চাহিদা কমেছে ৩০ শতাংশ বা ৩ কোটি ব্যারেল। কিন্তু প্রতিদিন ১০ কোটি ব্যারেল তেল উত্তোলন করেই চলেছে খনি মালিকরা। বিক্রি না হওয়া তেল জমা হচ্ছে ট্যাংকারে, কিন্তু সেখানেও আর জায়গা নেই। যেকোনো মূল্যে মজুদ কমানোর তাড়না থেকে, মূল্যহীন হয়ে পড়েছে অপরিশোধিত তেল।

গভীর সাগর কিংবা মরুভূমি-অবস্থান যেখানেই হোক, তেলকূপ মানেই দিনরাত কর্মচাঞ্চল্য। পাইপলাইনে অবিরাম মাটির নিচ থেকে উঠে আসে তেল। পেট্রোডলারে ফুলে-ফেপে ওঠে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর অর্থনীতি। পরম আরাধ্য এ প্রাকৃতিক সম্পদই হঠাত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে উৎপাদকদের।

এস এন্ড পি গ্লোবাল প্ল্যাটস’র প্রধান বিশ্লেষক কাং উ বলেন, চাহিদা-যোগানের তারতম্য ছাপিয়ে এখন বড় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে অবকাঠামো। তেলের মজুদ রাখার সক্ষমতা শেষ সীমায় পৌছে গেছে। আগামী কয়েক মাসও তেলের দাম নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে মজুদের সক্ষমতার বিষয়টি।

ক্রেতা-বিক্রেতা সবমিলিয়ে বিশ্বে ৬৮০ কোটি ব্যারেল তেল মজুদ রাখার সক্ষমতা আছে। জ্বালানির ব্যবহার কমে যাওয়ায় যার বেশিরভাগই ভর্তি। এমনকি সাগরে ট্যাংকার ভাড়া করেও রাখতে হচ্ছে তেল। ফলে কয়েক দশকের মধ্যে দাম সর্বনিম্ন হলেও, ক্রেতা নেই। এ অবস্থায় খুব শিগগিরই তেলের দাম স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা।