তোমরা ঝগড়া করো না: রাখাইনে গিয়ে বললেন সু চি

মায়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি আজ বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো রাখাইন সফরে গিয়েছেন। রাখাইন পৌঁছে তিনি সেখানকার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তোমরা ঝগড়া করো না। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের ওই অঞ্চলে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্বিচারে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বুধবার রাতেও সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা।

আগাম কোনো ঘোষণা না দিয়েই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটুয়ে থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে মংডু’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন ময়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চি। সহিংসতার শিকার গ্রামগুলোর মধ্যে মংডু একটি।

মংডুতে যাওয়ার পর সেখানকার ইসলাম ধর্মীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান আরাকান প্রজেক্ট মনিটরিং গ্রুপের ক্রিস লিওয়া।

তিনি বলেন,মংডুতে গিয়ে সু চি সড়কপথে রোহিঙ্গাদের এলাকায় যান। তিনি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় জড়ো হওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

‘তিনি শুধু তিনটি বিষয় বলেছেন- তাদের শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে হবে, সরকার তাদের সহায়তা করবে এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ করা উচিৎ নয়।’

রাখাইনে কয়েকশ বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বসবাসের ইতিহাস থাকলেও ১৯৮২ সালে আইন করে তাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়। মায়ানমারের সেনাবাহিনী এবং ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাই রোহিঙ্গাদের বর্ণনা করে আসছেন ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ ও ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে।

গত কয়েক দশকে বহুবার সেনাবাহিনী এবং রাখাইনের বৌদ্ধদের নিপীড়নের শিকার হয়েছে রোহিঙ্গারা। এবারের ছয় লাখের বাইরে আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা গত কয়েক দশকে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এসেছে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে।

নোবেল বিজয়ী সু চির দল এনএলডি ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের মধ্যে দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা ছিল, তিনি হয়ত রাখাইনে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মেনে নেওয়া বা অধিকার বঞ্চিত ওই জনগোষ্ঠীর দুর্দশা নিজের চোখে দেখার জন্য রাখাইনে যাওয়ার কোনো আগ্রহ তিনি এর আগে দেখাননি।

গতবছর ৯ অক্টোবর মায়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিদ্রোহীদের’হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু পরও সেখানে ব্যাপক হত্যা-নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সে সময় রাখাইনে যাওয়ার জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে সময় তার সাড়া মেলেনি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২ নভেম্বর ২০১৭