দিনাজপুরের বিরামপুরে পুকুরে অতিথি পাখিদের অভয় অরণ্য

জেলার বিরামপুর পৌর সভার চকপাড়া মহল্লার একটি বিরোধীয় পুকুরে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অতিথি পাখিদের অভয় অরণ্যে পরিণত হয়েছে।  মনমুগ্ধকর পরিবেশে ওই পাখিরা উৎসব মুখর পরিবেশে পুকুরের দিবারাতি বিচারণ করছে।
সম্প্রতি  দিনাজপুর  বিরামপুর উপজেলার চক পাড়া গ্রামে বিরোধী একটি পুকুরে দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যক্ত থাকায় অতিথি পাখিদের    পুকুরটিতে বিচরণ উৎসব মুখর ও দৃশ্যমান লক্ষ্য করা গেছে ।  স্থানীয়  ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, বিরোধী পুকুরটির   আয়তন প্রায়  সাড়ে ৩ একর। পুকুরটির চারপাশে পাড় ঘেঁষে জনবসতি। পুকুরের মাঝের অংশটি দেখতে সমতল দ্বীপের মতো।  এর চারপাশ ঘিরে বলয়াকৃতির প্রায় ১০ মিটার চড়া ক্যানেল। পুকুর জুড়ে কচুরিপানা।  এসব কচুরিপানার ওপর বসে আছে হাজারো বালিহাঁস। বালিহাঁসের এমন বৈচিত্র্যময় দৃশ্য দেখতে শহর ও শহরের বাইরে থেকে প্রতিদিন  আসেন দর্শনার্থীরা।পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রায় ৫ বছর ধরে পুকুরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ৫ বছর আগে একদিন হঠাৎ  বালিহাঁসের একটি ঝাঁক উড়ে এসে পুকুরের মাঝখানে বসে। তখন আশপাশের কৌতূহলী মানুষ বালিহাঁস দেখার জন্য ভিড় জমিয়ে ছিল। আগের মতো সেই ভিড় এখন আর নেই। তবে প্রায়  বিরামপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে পাখি দেখতে আসেন। সঙ্গে শিশুদের নিয়ে আসেন বালি হাঁস দেখাতে । এসব তথ্য জানালেন চকপাড়ার  বাসিন্দা কবিরুল  ইসলাম।
গত ১১ মার্চ   বিকেলে দিনাজপুর জেলার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলামকে ওই স্থানে   পাখি দেখতে নিয়ে গিয়ে  ছিলেন। তিনি বলেন,  গ্রামের মাঝে একসাথে এত গুলো  পাখি দেখে  আমার খুব ভালো লাগছে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানায় , কখনো কিছুক্ষণের জন্য পাখি  উড়ে  গেলে দিন শেষে আবার পুকুরেই ফিরে আসে। এসব বালিহাঁসকে এলাকার কেউ বিরক্ত করে না। অচেনা কোনো দর্শনার্থী পুকুর পাড়ে এসে বালিহাঁস গুলোকে বিরক্ত করার চেষ্টা করলে পুকুরপাড়ের বাসিন্দারা  তাঁদের নিষেধ করেন।
এ বিষয়ে বিরামপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক মোঃ আক্কাস আলী   বলেন, ‘পুকুরটি নিয়ে শরিকদের মধ্যে মামলা  চলছে।  এ কারণে   ৫ বছর ধরে পরিত্যক্ত।  পুকুরটিতে জনসাধারণের আনাগোনা না থাকায় এটি এখন অতিথি পাখিদের আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, পাখিগুলো আমাদের এলাকার মেহমান। তাদের যাতে কেউ ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য এলাকার মানুষকে সজাগ করেছি।  ’বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবতী বলেন, ‘প্রতিবছর শীতের সময় বিভিন্ন স্থান  থেকে এসব অতিথি পাখি এখানে  আসে। আবার মার্চ-এপ্রিলের দিকে পাখিগুলো তাদের নিজ আবাস  স্থলে ফিরে যাবে। এসব অতিথি পাখিকে আশ্রয় দেওয়া ও রক্ষা করা আমাদের প্রত্যেক সচেতন মানুষের দায়িত্ব। দেশের বন্য প্রাণি সংরক্ষণ আইনে পাখিকে বিরক্ত বা হত্যা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব অতিথি পাখির  কেউ  ক্ষতি না করে, সে জন্য ওই এলাকায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের  কর্মী কাজ করেন। তাঁদের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারণকে সচেতন করা হয়েছে।’ (বাসস)