দুদকের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তার জরিমানাসহ যাবজ্জীবন

ফরিদপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে জরিমানাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের হাকিম মো. মতিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম শামসুর রহমান। তিনি ইসলামী ব্যাংক লি. শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা শাখায় সহকারী কর্মকর্তা কাম ক্যাশ পদে কর্মরত ছিলেন।

আদালত সূত্র জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত এ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তার চাকরি চলে যায় এবং তিনি আত্মগোপন করেন। যার কারণে রায় ঘোষণাকালে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ২০ মার্চ ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুর রহমান দুপুর সোয়া ১টার দিকে নামাজ পড়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান। পরে তিনি আর ব্যাংকে ফিরে আসেননি। ওইদিন বিকালে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় অতিরিক্ত (ডুপ্লিকেট) চাবি দিয়ে ক্যাশ খুলে হিসেব মিলিয়ে দেখেন নির্দিষ্ট টাকার চাইতে ক্যাশে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা কম আছে।

ওই দিনই ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ডামুড্যা থানায় শামসুর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গত ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর এ মামলা তদন্ত করার দায়িত্ব নেয় দুর্নীতি দমন সমন্বিত ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল।

তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, শামসুর রহমান ওই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব গ্রহিতা নূর জাহানের ৩০ হাজার টাকা, মতি ফকিরের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও চাঁন মিয়ার ৩২ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

পরে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ সহকারি পরিচালক কমল চন্দ্র পাল গ্রাহক ও ব্যাংকের মোট ৪ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকের সহকারী কর্মকর্তা (ক্যাশ) শামসুর রহমানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

দুদকের পিপি মো. মজিবুর রহামন জানান, বুধবার আদালত দুটি ধারায় শামসুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে শামসুর রহমানকে যাবজ্জীবন স্বশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছর স্বশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ১ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

পিপি আরও জানান, শামসুর রহমানকে দুটি সাজা একই সাথে ভোগ করতে হবে। তবে শামসুর রহমান ২০১২ সালের ২০ মার্চ থেকে অদ্যাবধি পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলাদায়ের দিনই তাকে ব্যাংকের কর্মকর্তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ