নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস ও ঐহিত্য সচেতন করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সচেতন করে তুলতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সচেতন করে তোলার দায়িত্ব অনেকখানিই আমাদের। যদি আমাদের সন্তানদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বেদনা আর অহংকারের বিষয়গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে না দিই, তাহলে তারা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে না। তাই প্রচলিত শিক্ষার সাথে তাদের শিকড়ের সন্ধান দিতে হবে, জানাতে হবে আমাদের গৌরবদীপ্ত অতীতের কথা।’

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হামিদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল পাঠদান কেন্দ্র নয় বরং তা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার শ্রেষ্ঠ পাদপীঠ। শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণভাবে গড়ে তুলতে এবং তাদের বিশ্ব নাগরিকে পরিণত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

‘তাই পাঠ্যক্রম ভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি মুক্তচিন্তা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা, জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ড, সমকালীন ভাবনা, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা ইত্যাদি সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এর প্রভাব ব্যক্তি জীবনে তো বটেই, সামষ্টিক জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে,’ যোগ করেন তিনি।

জাতি গঠনে শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতার গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা সমাজকে বিকশিত করে, কিন্তু নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা সমাজ, দেশ ও জাতির কোনো উপকারে আসে না।

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ সুষম উন্নয়নের জন্য সৃজনশীল ও মেধাসম্পন্ন জনবল অপরিহার্য জানিয়ে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আলোকিত মানুষরাই পারে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে।

পাস করা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান নিয়ে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রায় দেড়শ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা নিয়ে বের হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থী যাতে সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত হতে পারে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। শিক্ষার সাথে কর্মের সংযোগ ঘটাতে হবে।

‘কর্মবিমুখ শিক্ষা হতাশার জন্ম দেয়, প্রতিভার বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই পাঠ্যক্রম এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে একজন শিক্ষার্থী তার অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে, গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পাশাপাশি নিজেকে একজন সৃজনশীল ও আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। তাহলেই ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে সুখী-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা,’ বলেন রাষ্ট্রপতি।

ইউল্যাবের এবারের সমাবর্তনে মোট ১ হাজার ৩০২ জন স্নাতক সনদ গ্রহণ করেছেন। সেই সাথে তিনজন পেয়েছেন স্বর্ণপদক।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ