নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি পেলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল: মেয়র আতিক

কোন ভবনের সিড়িতে প্রতিবন্ধকতা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি পেলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
আজ রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এ ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এক্সারসাইজ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র বলেন, ‘ফায়ার সেফটি, বিল্ডিং সেফটি, ইলেকট্রিক্যাল সেফটি- এগুলো নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত করতে হবে। অনেক বাণিজ্যিক ভবনে দেখা যায়, সিড়িতে দোকান বসিয়ে দেয়া হয়। আমরা যেকোনো সময় পরিদর্শনে যাবো। কোন ভবনের সিড়িতে প্রতিবন্ধকতা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি পেলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী- ভবন নির্মাণের সময় ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিভাগের ছাড়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক। উঁচু ভবনের ক্ষেত্রে এসবের সঙ্গে ফায়ার ডিটেক্টর, স্মোক ডিটেকটর, উচ্চগতির পানি স্প্রে সিস্টেম ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন সিস্টেম থাকাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু অন্তত পরিতাপের বিষয় যে- রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন নগরীর বেশিরভাগ ভবন নির্মাণে এসব কোড ঠিকমতো মানা হয় না, যার ফলে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে।’
সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিজিএমই’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার এক মাস পরেই রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরেই আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে সরাসরি উদ্ধার কাজ শুরু করি। ছাত্রজীবনে বিএনসিসি আমাদের শিখিয়েছে দুর্যোগের সময় ঘরে বসে থাকলে চলবে না। মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যেতে হবে। দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘রানা প্লাজা ধ্বসের পরে গার্মেন্টস সেক্টর হুমকির মুখে পড়ে যায়। তখন আমি বিজিএমই’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি রিলায়েন্স এবং একোর্ড এর সাথে দফায় দফায় মিটিং করি কমপ্লায়েন্স ইস্যু নিয়ে। ন্যাশনাল ফায়ার প্রজেকশন এসোসিয়েশন (এনএফপিএ) এর সাথে মিটিং করে ফ্যাক্টরিগুলোর অগ্নি নিরাপত্তা বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা এবং ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করি। এনএফপিএ এবং বিএনবিসি এর সাথে সমন্বয় করে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে গার্মেন্টস সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হই।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিকে বায়ারদের কাছে ওপেন করে দেই। এর ফলে আমরা তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হই। তারা ফ্যাক্টরি ভিজিট করে অনলাইনে রিপোর্ট করে দিয়েছে। যেসব ফ্যাক্টরিতে নেগেটিভ রিপোর্ট হতো, তাদের কাছে অর্ডার আসতো না। এর ফলে ধীরে ধীরে সবাই কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইউপি’র উপাচার্য মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুব-উল আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন, রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম।