পিরোজপুর ৩ বছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে দেড় হাজার টন

পিরোজপুর জেলায় জাটকা ও ডিম ভরা ইলিশ শিকার বন্ধে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মৎস্য বিভাগ কঠোর অবস্থান নেওয়ায় ৩ বছরে ১ হাজার ৪শত ৭২ টন ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। জেলা মৎস্য বিভাগের একটি সূত্রে জানা গেছে এ জেলায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৫শ১০ মেট্রিক টন যা ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ছিলো ৩ হাজার ৪শ৭৩ মেট্রিক টন। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের জুন পর্যন্ত ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭২ মেট্রিকটন। পাশাপাশি অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২৬ হাজার ৮শত ৭৯ মে:টন এ পৌছে যাওয়ায় এ জেলা এখন মৎস্য উদ্বৃত্ত জেলা।

পিরোজপুরের ৯টি নদ-নদীতে জাটকা ও মা ইলিশ আহরন বন্ধে চলতি মাসের ৯ তারিখ থেকে গত রাত ১২টা পর্যন্ত ১১৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও নির্বাহী অফিসারদের নেতৃত্বে পরিচালিত এসব আদালত নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার এবং সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের অপরাধে একই সময়ে ১ কোটি ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে এবং ৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া অর্থ দন্ড এবং ২১টি মামলাও দায়ের করা হয়।

পিরোজপুরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেন জানান এ জেলায় ২৪ হাজার ৬শত ৮০ জেলের মধ্যে ইতিমধেই ইলিশ আহরণে নিয়োজিত থাকা ১৪ হাজার ৮৭৫ জন জেলের প্রত্যেককে ২০ কেজি করে মোট ২৭০ মে: টন চাল দেয়া হয়েছে।এ ছাড়া ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা মৎস্য চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে।

ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৪৬টি প্রদর্শনী খামার, বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া চাষ এবং কাকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্পে মোট প্রদর্শনী খামার সংখ্যা ৯টি। এছাড়া জলাশয়ে সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প সমন্বিত উপ কুলীয় বনায়ন ও উপ বনায়ণ প্রকল্প ১২০টি প্রদর্শনী খামার থেকে মৎস্য চাষীরা হাতে কলমে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। পিরোজপুরে এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে ২০১৬-২০১৭ থেকে প্রতি বছর ইলিশের উৎপাদন গড়ে ১২% করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর মা ইলিশ শিকার, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা শিকার এবং সাগরে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকায় ইলিশের এ উৎপাদন বৃদ্ধি হচ্ছে এবং চলতি বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত জেলার সকল হাট বাজারে প্রচুর পরিমাণ ইলিশের আমদানী পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এর মূল্য ক্রমান্বয়ে কমে গিয়ে সব শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে।

এদিকে ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধের পর গতকাল দুপুর থেকেই ইলিশ শিকারী জেলেরা সাগর ও নদী অভিমুখে ট্রলার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। গত রাত ১২টার পর থেকে তারা বিনা বাধায় ইলিশ আহরণ পরিবহন ও বাজারজাত করতে পারবে।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান