প্রতিবন্ধিতা কোনো বাধা নয় বরং চ্যালেঞ্জ : পলক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আমাদের মাঝে অনেকে প্রতিবন্ধিতাকে বাধা মনে করেন। কিন্তু প্রতিবন্ধিতা কোনো বাধা নয়, বরং এটা চ্যালেঞ্জ। একটু বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ এবং ব্যক্তি-পরিবার-রাষ্ট্রের সহযোগিতা পেলে তারা শুধু নিজেকেই জয় করেন না, বদলে দেন পুরো পৃথিবী, হয়ে ওঠেন পুরো পৃথিবীর অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। সোমবার (০১ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আয়োজিত বিশেষভাবে সক্ষম (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তিদের জন্য আয়োজিত চাকরি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধীদের জন্য আইসিটি সেক্টরে কর্মসংস্থান করতে ঢাকায় দিনব্যাপী প্রযুক্তিবিষয়ক এই চাকরি মেলার আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে চতুর্থবারের মত এই বিশেষায়িত তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক চাকরি মেলার আয়োজন করা হয়।
মেলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এ দেশের নারী-পুরুষ, নবীন-প্রবীণ বিশেষভাবে সক্ষম সবার কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল আমরা পৌঁছে দিতে চাই। আমরা গত বছর ১০০ জনেরও বেশি বিশেষভাবে সক্ষম তরুণ-তরুণীকে চাকরির ব্যবস্থা করেছিলাম। আশা করছি, আরও বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারব।

তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের চেতনাকে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। আমরা বিশ্বাস করি প্রতিবন্ধিতা অজেয় নয়। তাদেরকে একটু সহযোগিতা করলে তারাও এই পৃথিবীটাকে বদলে দিতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইড যেন গ্রাম-শহর, নবীন-প্রবীণ এমনকি যারা বিভিন্ন প্রকার প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জীবনযাপন করছে, তাদের মধ্য যেন কোনো প্রকার বৈষম্য তৈরি না করে সেজন্য আইসিটি ডিভিশন কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্সংস্থানের মাধ্যমে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজ্যাবিলিটিসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষমতায়ন শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ৩ বছরে ৩ হাজার প্রতিবন্ধীকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’ দেশে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোই মূলত চাকরির ব্যবস্থা করছে। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সদস্যভুক্ত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং বা বাক্য, অ্যাকসেঞ্চার, মাই আউটসোর্সিং, ডিজকন, সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বেশ কিছু সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। এক্সিম ব্যাংকও চাকরি দিয়েছে কয়েকজনকে।

অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের জন্য ‘কথা বলতে চাই’ নামে একটি যোগাযোগ অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়। বিগত বছরের চাকরি প্রদানকারী মাই আউটসোর্সিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজিরুল বাশার ও ফিফোটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদ হোসেনকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব, সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম। মেলা শেষে প্রতিমন্ত্রী স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।

আজকের বাজার: এনএল / সালি, ০১ জানুয়ারি ২০১৮