বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আজ

আজ (৩১ মে) বৃহস্পতিবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘তামাক করে হৃৎপিন্ডের ক্ষয়, স্বাস্থ্যকে ভালোবাসি, তামাককে নয়’।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। তামাকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর ৩১ মে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর মধ্যে ফুসফুস ও মুখ গহ্বরের ক্যান্সারই বেশি। আর এসব ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধুমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন।

তামাকের কারণে বাড়ছে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও। এছাড়া তামাক জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি, পরিবেশ ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।

বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ৭ শতাংশ তামাক সেবন করে থাকে। আর প্রতি বছর এ হার ১০ থেকে ১২ শতাংশ আকারে বেড়ে চলছে। বর্তমানে ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ ৪ কোটি ১৩ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষ প্রতক্ষ্যভাবে তামাক ব্যবহার করছে। এছাড়া ৫৮ ভাগ পুরুষ ও ২৯ ভাগ নারী বিড়ি-সিগারেট তামাক সেবন করে থাকে। আর নারীদের মধ্যে ২৮ শতাংশ এবং ২৬ শতাংশ পুরুষ প্রতিদিন পান, জর্দা, গুলের মাধ্যমে ধোয়াহীন তামাক সেবন করে। অন্যদিকে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টারা বলছেন, প্রতি বছর প্রায় ৯৬ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহার জনিত কারনে মৃত্যু বরণ করে থাকে। এর অন্যতম কারণ হল এসব দ্রব্যের সহজলভ্যতা ও মূল্য কম হওয়া।

সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্সের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম জানান, তামাক থেকে যত রাজস্ব আসে তার দ্বিগুণের বেশি খরচ হয় তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায়।

বাংলাদেশে ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনের ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় বছরে ১২ লাখের বেশি মানুষ, আর ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ অকাল পঙ্গুত্বের শিকার হয়। মারা যায় প্রায় এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি মানুষ।

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তামাকের কারণে দেশে প্রতিবছর এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। তাই তামাক গ্রহনে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে এর উপর কর বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসডিজির আলোকে সরকারের ৭ম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে তামাক নিয়ন্ত্রণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। বিগত বিশ বছরে, দিবসটি সরকার, জনস্বাস্থ্য সংগঠন, ধূমপায়ী, উৎপাদনকারী, এবং তামাক শিল্পের কাছ থেকে উদ্যম এবং প্রতিরোধ উভয়ের মাধ্যমে বিশ্বজূড়ে পালিত হয়ে আসছে।

আজকের বাজার/একেএ