ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের ফল দেখা শুরু হয়েছে

সরকার ব্যাংকিং খাত ও মানি মার্কেটে ন্যায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, ফলে মানি মার্কেটের ফল ইতোমধ্যে জনগণ দেখতে পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

২৯ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে কয়েকজন সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।

ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের ফিরিয়ে আনা জরুরি এবং সেজন্য সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট কম দেওয়া হয়। সাথে আবগারি শুল্ক কেটে নেওয়া হয়। অথচ ইসলামপুরে যারা ব্যবসা করেন সেখানে ১ লাখ টাকায় ৫ হাজার টাকা ইন্টারেস্ট দেওয়া হয়। তাহলে ব্যাংক কেন এ ইন্টারেস্ট দিতে পারে না।

এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ইন্টারেস্ট দেয়। সামান্য আবগারি শুল্ক কেটে রাখার পর বাকি টাকা গ্রাহক পায়। সরকার ব্যবসা করে কোন দিনই ভালো করেনি। সেজন্য আমরা সরকারকে ব্যবসা থেকে দূরে রাখি। দেশের ব্যবসার ৮০ শতাংশ ব্যাংকিং খাতে হয়। বাকি ২০ শতাংশ সরকারের হাতে থাকে। সরকার ব্যবসায়ীদের হাতে পুরো ব্যবসা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছে।

ব্যাংকিং খাতে সুশাসন সম্পর্কে মুহিত বলেন, সুশাসনের সীমানা ব্যাপক। এর মধ্যে ডাইরেক্টর নিয়োগ, ব্যাংকিং ব্যবস্থার আইন-কানুন সবই আছে। বর্তমান সরকার গত ৮ বছরে ব্যাংকিং খাত, মানি মার্কেটে অত্যন্ত ন্যায়নিষ্ঠভাবে কাজ করে গেছে। তার ফল ইতোমধ্যে মানি মার্কেটে জনগণ দেখতে পাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতেও তার ফল দেখা শুরু হয়েছে।

বেসরকারি ব্যাংক পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, এখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর মোটামুটি নেই; ব্যাংকিং খাতে সুশাসন দরকার- সংসদ সদস্যের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, ব্যাংকের পরিচালক সদস্যদের মধ্যে অবশ্যই স্পন্সর আছে। তাদের অভিযোগ, ব্যাংক পরিচালনায় পারিবারিক সদস্য সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনটি বর্তমানে সংসদের বিবেচনায় আছে। সংসদীয় কমিটি বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তারা তাদের প্রস্তাব ও সুপারিশ করলে তা পাস হবে। এ রিপোর্ট পাওয়ার পর সরকারের অবস্থান জানাতে পারবো। এটি এখনো সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকের মধ্যে একই পরিবারের অনধিক ৪ জন সদস্যকে দেওয়ার প্রস্তাব হয়েছে। অভিমত হলো, সংসদীয় ব্যাংকিং কমিটির রিপোর্ট দেখে অবস্থান জানানো হবে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর সম্পর্কে মুহিত বলেন, প্রত্যেক ব্যাংকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর রয়েছে। সরকার সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর নিয়োগ অনুমোদন করে।

সরকারি ব্যাংকগুলোকে সরকার খামাখা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক খাত খুবই নাজুক। ব্যাংকিং খাতে কোন ধরণের বিপদ সারাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এজন্য যখনই ব্যাংকিং খাতে কোন অসুবিধা সৃষ্টি হয় তখনই সেখানে সরকার পদক্ষেপ নেয়।

উদাহরণ দিয়ে মুহিত বলেন, ১৯৪৯ সালে কমরেড ব্যাংকে লাল বাতি জ্বলে যাওয়ায় আমার আড়াইশ টাকা জিরো হয়ে গিয়েছিল। দেশে কোন ব্যাংকে লাল বাতি জ্বলুক এটা কোন মতেই চাই না। সৌভাগ্যের বিষয় ১৯৪৯ এর পরে এরকম কোন লাল বাতি কোন ব্যাংক জ্বালায়নি।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৯ জুন ২০১৭