ভারতকে বিদায় করে সেমিতে বাংলাদেশ

এসিসি এশিয়া কাপের গ্রুপ ‘এ’ এর বৃষ্টিবিঘ্নিত শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৮ রান। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই দাপুটে ব্যাট করতে থাকে বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পিনাক ঘোষ ও নাইম শেখ।
ভারতের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট করতে থাকা এই দুই ব্যাটসম্যান বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়ার পর উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে যোগ করেন ১৩.১ ওভারে ৮২ রান। ৪৪ বলে ৩৮ রান করা নাইম শেখকে মন্দীপ সিং সাজঘরের পথ ধরালে প্রথম উইকেটের পতন ঘটতে বাংলাদেশ যুবাদের।
নাইমের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেননি টাইগারদের দলনেতা সাইফ হাসানও। ফিরে যান মন্দীপ সিংয়ের শিকারে পরিণত হয়ে মাত্র ১৬ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে। তবে ততক্ষণে ম্যাচ জয়ের ভিত গড়ে ফেলে বাংলাদেশ। অধিনায়ক ফিরে গেলেও বিপর্যয় আর বাড়তে দেননি পিনাক ঘোষ ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ন তৌহিদ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৮৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়ে মাঠ ছাড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান।
অর্ধশতক পূর্ণ করে ৬ চার ও ৩ ছয়ে পিনাক ঘোষ অপরাজিত থাকেন ৮১ রানে আর তাঁকে সঙ্গ দেওয়া তৌহিদের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৩২ বলের ঝড়ো ৪৮ রান। ২ চারের সাথে ৪ ছয় দিয়ে ইনিংস সাজান এই ব্যাটসম্যান। ভারতের পক্ষে একমাত্র বোলার হিসেবে মন্দীপ সিং লাভ করেন দুটি উইকেট।
এর আগে কুয়ালালামপুরের রয়্যাল সেলাঙ্গোর ক্লাব মাঠে গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে টস ভাগ্যে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়ক সাইফ হাসান। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২ বল মোকাবেলা করতেই বৃষ্টির বাগড়ায় পড়ে দুই দলের মধ্যকার ম্যাচটি।
বৃষ্টি বাধায় দীর্ঘ দেড় ঘন্টা পর ম্যাচটি আবারও মাঠে গড়ালে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে উভয় দলের জন্য ৩২ ওভারের ম্যাচ আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাচ অফিসিয়ালরা। ওভার কমিয়ে আনার ফলে শুরু থেকেই বেশি রান করার লক্ষ্যে মারমুখি ব্যাট করতে থাকে ভারতের দুই ওপেনার। তবে ভারতের এই কৌশল ইনিংসের প্রথম ওভারেই মনজুট কালরাকে রান আউট করে ভেস্তে দেন আফিফ হোসেন।


এরপর কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনে ব্যাট করতে থাকে রাহুল দ্রাবিড়ের শিষ্যরা। এক পর্যায়ে ২০ ওভারের মধ্যে দলীয় ১০০ রান তুলতেই নাঈম হাসান, রবিউল হকদের বোলিং তোপে শির্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে বসে ভারতের যুব দল। তবে এই বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকে লড়াকু সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে নামা সালমান খান। তাঁর ৩৮ বলের লড়াকু ৩৯ রানের ইনিংসের সাথে দর্শন নালকান্দের ১৩ ও শিভা সিংয়ের ১৭ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৩২ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৮৭ রান যোগ করতে সক্ষম হয় ভারত।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্পেল করেন রবিউল হক। ৪৩ খরচায় এই বোলার নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট। তাঁর পাশাপাশি উইকেট পেয়েছেন আফিফ হোসেন ও নাঈম ইসলাম। উভয় বোলারই নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
উল্লেখ্য এই জয়ের ফলে গ্রুপ ‘এ’ থেকে সবকয়টি ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে উর্ত্তীণ হলো বাংলাদেশ। অপরদিকে বাংলাদেশের কাছে হারের খেসারত হিসেবে চলমান আসর থেকে ছিটকে গেলো ভারত। প্রসঙ্গত এর আগে নেপালের বিপক্ষে হারের স্বাদ পায় শক্তিশালী ভারতের যুবারা। যার ফলে আসরে একটি জয়ের দেখা পেলেও সেমিফাইনালে যাওয়া হলো না রাহুল দ্রাবিড়ের শিষ্যদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড-
ভারত অ.১৯ দলঃ ১৮৭/৮ (৩২ ওভার)
সালমান ৩৯, রাওয়াত ৩৪; রবিউল ৪৩/৩, আফিফ ৩৮/২, নাঈম ৩৮/২
বাংলাদেশ অ.১৯ দলঃ ১৯১/২ (২৮ ওভার)
পিনাক ৮১*, তৌহিদ ৪৮*, নাইম ৩৮, সাইফ ১৬; মন্দীপ ৩৬/২
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
আজকের বাজার: সালি / ১৪ নবেম্বর ২০১৭