ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে হবিগঞ্জের ২ যুবক নিখোঁজ

লিবিয়া থেকে নৌ-পথে ইতালি যাবার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় হবিগঞ্জের দুই যুবক নিখোঁজ রয়েছেন।

তারা হলেন- সদর উপজেলার লোকড়া গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (২২) ও আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল মোক্তাদির (২২)।

নিখোঁজদের পরিবার জানায়, কাইয়ূম, মোক্তাদির, নূরুল আলম ও মামুন মিয়া ইতালী যাবার জন্য ৬/৭ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়। দালালের মাধ্যমে তারা প্রথমে লিবিয়া যায়। তাদের সাথে সিলেট, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও লোকজনকে একত্রিত করে দালাল।

গত ৮ মে রাতে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দু’টি নৌকায় তোলা হয় তাদের। আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল মোক্তাদির ও মামুন মিয়া এক নৌকায় ছিলেন। ওই নৌকায় যাত্রী ছিল ৭৫ জন। কাইয়ূম, মুক্তাদির ও মামুনকে বহনকারী নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে যায়। মামুনের নিকট বড় বেলুন থাকায় তিনি পানিতে ভাসতে থাকে। এ সময় মুক্তাদিরও তার হাতে ধরা ছিল। সাগরে সাঁতড়ানোর একপর্যায়ে মামুন নিজেকে রক্ষায় মোক্তাদিরকে ছেড়ে দেন। এরপর মুক্তাদির কোন অবস্থায় আছেন, মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন এর কিছুই বলতে পারেন না মামুন।

এদিকে প্রায় ৮ ঘণ্টা সাগরে ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাছ ধরার একটি ট্রলারের লোকজন দেখতে পেয়ে মামুনকে উদ্ধার করে। ডুবে যাওয়া নৌকাতে ৭৫ জন যাত্রী ছিল বলে জানা যায়।

লোকড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহির মিয়া জানান, উদ্ধার হওয়া মামুন মিয়া তার ভাগ্নে। মোবাইলে মামুন মিয়া জানায়, নৌকাডুবির পর মোক্তাদিরের সাথে সে হাত ধরে সাঁতার কেটেছে অনেকক্ষণ। হাত ছেড়ে দেয়ার পর আর মোক্তাদিরকে দেখতে পায়নি।

আব্দুল কাইয়ুমের বাবা হাজী আলাউদ্দিন জানান, গত বুধবার (৮ মে) তার ছেলে বাড়িতে ফোন করে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বলে জানায়। নৌকাডুবির পর থেকে তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুক্তাদিরও রওনা দেয়ার আগের দিন বাড়িতে ফোন করেছেন বলে জানিয়েছেন তার চাচা আব্দুল খালেক।

কাইয়ুমের ভাই আলতাব হোসেন জানান, কাইয়ুম গত বছর বৃন্দাবন সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদে মাস্টার রোলে চাকরি করতেন। ইতালি যাবার উদ্দেশ্যে দালালের মাধ্যমে গত ৯ মে নৌকায় উঠে। নৌকা ডুবির পর তার খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মুক্তাদির যে মামুনের হাতে ধরা ছিল সেটা মামুন জানিয়েছে। এছাড়া আর কোন খবর তারা পাচ্ছে না। দালালের সাথে তাদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে দালালও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লুকড়া ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন আব্বাস জানান, তাদের নিখোঁজের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। সার্বক্ষণিক তাদের পরিবারের সাথে তিনি যোগাযোগ রাখছেন। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ দুইজনের হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে তারা জীবিত না মারা গেছে তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।

আজকের বাজার/এমএইচ