‘ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম গাজীপুরের পুলিশ’

গাজীপুরের পুলিশ এখন ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আর এই আতঙ্কের মহানায়ক হচ্ছে এসপি হারুন। যার হাতে বিরোধী দলের এমপি থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী পর্যন্ত নিপীড়ন নির্যাতন ও আর্থিক শোষণের শিকার হয়েছে বারবার।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, এসপি হারুনের দাপটে গাজীপুরে সাধারণ নিরীহ মানুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিরোধী দলের তরুণ কর্মীরা কেউ গাজীপুরে অবস্থান করতে পারে না। গাজীপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম এসপি হারুন। তার লাগামছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারে গাজীপুরবাসীর স্বপ্নে-দু:স্বপ্নে দিনরাত্রী এক হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্বিকার। আমি অবিলম্বে গাজীপুরের এসপি হারুনের প্রত্যাহার দাবি করছি।

অভিযোগ করে রিজভী বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ২ সিটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন পর্যন্ত দুই সিটিতে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি ইসি। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও দুই সিটিতে ক্ষমতাসীনদের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কালো টাকার ছড়ানোর অভিযোগ করলেও এবং প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ইসিতে জমা দিলেও নির্বাচন কমিশন অন্ধের ভূমিকা পালন করছে।

তিনি বলেন, গতকাল গাজীপুরের মৌচাকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল সাহেবের সভাপতিত্বে এক নির্বাচনী যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, আহমদ হোসেন এমপি এবং গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীরকে বিজয়ী করতে আহ্বান জানান। যা সুষ্পষ্টভাবে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে আরো অবনতি হয়েছে। গতকাল দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে দেখা করার পর বেগম জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে এখনো তার পছন্দানুযায়ী হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে সরকার প্রতিহিংসা বাস্তবায়নে চুড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছে কিনা তা নিয়ে জনমনে এখন নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ক্রমাগত অবনতির খবরে গোটা জাতি এখন চরম উদ্বিগ্ন। দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভৎস মূর্তি মানবজাতিকেই শিহরিত করছে।

রিজভী বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার যেন শেষ নেই। তাকে নিয়ে তাদের অন্তহীন ষড়যন্ত্র বারবার ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নানা অপপ্রচারের জন্য সেল খোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপ-প্রেস সচিবের ফেসবুক আইডিতে নানা মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এই ধরনের অপপ্রচার নিম্নরুচির পরিচায়ক। যারা কুরুচিসম্পন্ন এবং যারা অপরাজনীতি ও অসভ্যতার চর্চা করে তারাই কেবল অসত্য ও নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নেয়।

এস/