মাথায় আঘাত পেয়েই রাজীবের মৃত্যু: ঢামেক

রাজধানীতে বেপরোয়া ২ বাসের রেষারেষিতে ডান হাত বিচ্ছিন্ন ও মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস এ তথ্য জানান।

ডা. প্রদীপ বলেন, আমিসহ কয়েকজন চিকিৎসক মিলে রাজীবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। ২ বাসের চাপায় তার হাত বিচ্ছিন্ন হয়েছিল এবং মাথার হাড় ভাঙা ছিল। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই রাজীবের মৃত্যু হয়েছে।

রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম জানান, জোহরের নামাজের পর ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে তারা রওনা হবে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে রাজীবকে দাফন করা হবে।

এর আগে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজীবের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজীবকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

উল্লেখ, গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন মহাখালী থেকে সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ করে পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করে।

সে সময় বিআরটিসির দোতলা বাসটির পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাতটি বাইরের দিকে সামান্য বেরিয়েছিল। স্বজন পরিবহনের বাসটি বিআরটিসি বাসের গা ঘেঁষে পেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজীবের হাতটি কাটা পড়ে। তাকে দ্রুত পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সে হাতটি রাজীবের শরীরে আর জোড়া লাগাতে পারেননি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজীব হোসেনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

সুস্থ হলে তাকে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুস্থ হয়ে সেই সুযোগ গ্রহণ করার আগেই পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নিলেন রাজীব।

এস/