মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জাপানের

মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য ‘অনুকূল’ পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে জাপান।

প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সাথে এই সপ্তাহে জাপান সফরকালে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি বৈঠক করেন। বৈঠকে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।

‘বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বদেশ প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য,’ বলে জাপান সু চিকে আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর কক্সবাজারে প্রবেশ করেছেন।

গত দুই বছরে প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে মিয়ানমার ‘ব্যর্থ’ হয়েছে বলে জানিয়েছে এখানকার কর্মকর্তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের নাম মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করেছে। তবে মিয়ানমার এখনও বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়নি।

যদিও, মিয়ানমার দাবি করছে বাংলাদেশ থেকে ‘বাস্তুচ্যুত’ মোট ৩৫১ জন স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করার ব্যর্থতাকে আড়াল করতে এটি মিয়ানমারের একটি প্রচেষ্টা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এ জাতীয় স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে তিনি জানেন না।

২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর সুবিধার্থে ‘দৃশ্যমান কাজের ব্যবস্থা’ সম্পর্কিত একটি নথি স্বাক্ষর করে।

এতে শর্ত দেয়া হয় যে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়া থেকে দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর এবং এ বছর একবার মিলিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য দু’বার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের মধ্যে ‘আস্থা তৈরিতে ব্যর্থ’ এবং রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিবেশের অভাবে তাদের ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সু চির সাথে বৈঠককালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে বলেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি উন্নয়নে মিয়ানমারের প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে জাপান সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে।

রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তদন্ত কমিশনের সুপারিশ অনুসারে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীকে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।

রাখাইন রাজ্য প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সু চি জানান, এই সমস্যা ‘সঠিকভাবে’ সমাধানের জন্য আলোচনা করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিধা করবেন না। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ