যুক্তরাষ্ট্রে ২০৪০ সালে ইহুদির চেয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বেশি হবে

ছবি: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস রত মুসলিম নাগরিকরা

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান বিরোধী প্রচারণা এবং মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করার আহবানসহ নানা কারনে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ মুসলমানেরা উদ্বিগ্ন। এ বিষয় নিয়ে ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক প্যানেল আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ মুসলমানেরা এই দেশে তাদের নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৩ লক্ষ মুসলমানের বসবাস, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ। আগামী দুই বা তিন দশকে এই সংখ্যা দ্বিগুন হবে; আর ২০৪০ সাল নাগাদ মুসলমানেরা হবে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়।

অনুষ্ঠানে তরুণ মুসলমানেরা বললেন তারা সমজাতীয় গোষ্ঠী নন। সেন্ট লুইসের বাসিন্দা ওয়া রোজ আক্তাস বললেন তার মা একজন আমেরিকান খ্রিষ্টান এবং বাবা একজন তার্কিশ মুসলমান।

“মধ্যপন্থী মুসলমান বা রক্ষনশীল মুসলমান নামে মানুষ প্রায়শই এটাকে বিভক্ত করতে চায় (মুসলমান সম্প্রদায়); কিন্তু আসলে এতে অনেক বৈচিত্র বিদ্যমান। এবং আমি মনে করি এই কারনে যুক্তরাষ্ট্র ইসলাম নিয়ে এতো আলোচনা”।

ভার্জিনিয়ার সোমালিয়ান আমেরিকান তরুণ মুসলমান মোহামেদ হুসেইন বলেন, অনেক সময় তরুণ মুসলমানদের একাধিক পরিচয় থাকে।

ভয়েস অব আমেরিকার আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ মুসলমানেরা

“এটি অবশ্যই কঠিন; শুধুমাত্র মুসলমান বা আমেরিকান মুসলমান হিসাবে নয়; সোমালি নাগরিক, কৃষ্ণাঙ্গ অথবা তরুণ বয়সী; বিভিন্ন ভাবে নিজেকে পরিচয় দিতে হচ্ছে। এটি সহজ নয়; কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমি এ্রখানে জন্মেছি আর এই ধর্ম চর্চা করতে করতে বেড়ে উঠেছি; এই প্রক্রিয়া আমার জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। আর আমার বাবা মায়েদের মতো অভিবাসিদের কথা ভাবুন। আপনাকে নানাভাবে খাপ খাওয়ানো শিখতে হবে। সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় থেকে এসে এখানে তারা সংখালঘূ”।

প্যানেলিষ্টরা অভিযোগ করেন এখানে মুসলমানদের দ্বারা সংঘঠিত যে কোনো অপরাধ গনমাধ্যমে বেশি করে তুলে ধরা হয়। যেমনটি বলছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মোরসাল মোহামেদ।

“আমার ধারনা, যখনই কোনো মুসলমান কোনো ঘটনা ঘটায় তা গনমাধ্যমের শিরোনাম হয়; তার প্রতি বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়। আর ঐ একই ঘটনা যদি কোনো পশ্চিমার দ্বারা সংঘঠিত হয়; আমার ধারনা তাতে একই রকম প্রতিক্রিয়া হবেনা”।

ইরাকে জন্ম নেয়া তরুণ ওথম্যান আলতালিব বললেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা করলে মুসলমানদের অপরাধ সংঘঠনের হার অনেক কম। তিন বলেন তরুণ তরুণীরা বেশিরভাগ সময় কম্পিউটারে থাকার কারনে অনেক সময় তারা অনলাইনের মাধ্যমের জঙ্গীবাদে আকৃষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।

“আমি সকলের প্রতি যে বার্তা দিতে চাই তা হচ্ছে- আসুন আমরা তরুণ সম্প্রদায়কে একত্রিত করি এবং মসজিদে আসার আমন্ত্রণ দেই; তাদেরকে মুসলমান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আনার চেষ্টা করি এবং অন্যান্য মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করি”।

ইসলামপন্থী জঙ্গীবাদ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও আলোচনার কারনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের মুসলমানেরা খানিকটা হতাশাগ্রস্থ এবং তারা মনে করেন তাদের মতামত প্রকাশ ও ভিবষ্যৎ পরিকল্পনায় তাদের প্রতি আরো নজর দেয়া উচিৎ।ভিওএ

আজকের বজার/লুৎফর রহমান