রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈঠকে বসছেন তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যেসব ইস্যু প্রাধান্য পাবে, সে তালিকার শুরুতেই থাকছে রোহিঙ্গা ইস্যু। তাই এই ইস্যুতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং মিয়ানমারের ইউনিয়নমন্ত্রী টিন্ট সোয়ে।

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন একটি নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্র।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট রয়েছে। এসব ইভেন্টে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে তুলে ধরবেন।

গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কানাডার পার্লামেন্ট। দেশটির এমপিরা সর্বসম্মতিক্রমে এই স্বীকৃতি দেন।

এর আগে গত মাসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ এই মানবিক সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা সমস্যা তৈরির জন্য মিয়ানমারের সমালোচনা করে নিরাপত্তা পরিষদকে সম্মিলিতভাবে এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজ রবিবার নিউইয়র্কে পৌঁছার কথা রয়েছে। তিনি ৯০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন।

তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান ও তাদের প্রত্যাবাসন গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশ প্রথম দিকে বিষয়টি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মিয়ানমারের দিক থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এতে সম্পৃক্ত করা হয়। কিন্তু চীন বরাবরই রোহিঙ্গা ইস্যুর আন্তর্জাতিকীকরণের ঘোর বিরোধী।

সূত্র জানায়, আসন্ন বৈঠকেও চীন এই বার্তা পুনর্ব্যক্ত করবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী। একদিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হয়ে যাবে। তবে ভৌগোলিক কারণেই প্রতিবেশী দেশকে কখনো দূরে ঠেলে দেওয়া যাবে না। এটা মাথায় রেখেই আমরা এ সংকট সমাধানে এগিয়ে চলেছি। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

আজের বাজার/এমএইচ