শিক্ষকদের আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষায় মনোযোগি হবার আহবান

এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের জন্য কোনো সুখবর নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, এদেরকে এমপিওভু্ক্ত করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তার বরাদ্দ নেই।

এমপিওভুক্তির দাবিতে পাঁচ দিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষকরা। দাবি পূরণ না হলে রবিবার থেকে অনশনে যাওয়ার ঘোষণাও এসেছে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে।

শিক্ষকরা বলছেন, তারা কেউ কেউ ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করেও বেতন পাচ্ছেন না। অন্যের ভবিষ্যত গড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজের সন্তানের ভবিষ্যতই রয়েছে অনিশ্চয়তায়।

রোববার জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সচিবালয়ে ডাকা সাংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের এই দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে মন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তি করা একটি প্র্রক্রিয়ার বিষয়। এটা তাৎক্ষণিকভাবে করা যায় না।

শিক্ষকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয় মন্ত্রী বলেন, ‘এখন যদি তারা আন্দোলন করে তাহলে কী করার আছে? এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করলে লাভ হবে না। শীতের মধ্যে তারা এখানে কষ্ট পাবেন। এটা একটা সিদ্ধান্তের বিষয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষকরা জটিলতা বুঝতে পারছেন না, তারা মনে করছেন আমরা কিছুই করছি না। কিন্তু আমরা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু অর্থ না পেলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।

শিক্ষকদের কাছে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি মন্ত্রীর কাছে। প্রশ্ন করার সময়ই তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে যান। এরপর আবার প্রশ্ন করলেও জবাব আসেনি।

মন্ত্রী জানান, ১৯৮০ সাল থেকে এমপিও দেয়া শুরু হয়। ২০১০ সালেও তিনি ‘না বুঝে’ ২০২৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত করেছেন। কিন্তু এরপর জটিলতা তৈরি হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেন দরবার করে টাকা বরাদ্দ নিয়েছেন। কিন্তু সেটাও সরকারের জন্য চাপ হয়ে গেছে।

এমপিও দেয়া না গেলে শিক্ষকদের পাঠদানের অনুমতি দিচ্ছেন কেন-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এই অনুমতি দেয়ার সময় শর্ত জুড়ে দেয়া হয় যে তারা এমপিও ছাড়াই পড়াবেন। আর এই শর্ত মেনেই তারা পাঠদানের অনুমতি নেন কিন্তু পরে আবার আন্দোলন করেন।

শিক্ষকদের জন্য কি কিছুই করবেন না?-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের পক্ষের লোক, আমরা চাচ্ছি যে শিক্ষক পরিবারে কোনো সদস্য যেন না খেয়ে থাকে এবং কষ্ট পায়।’

‘কিন্তু আমি চাইলেও পারছি না। কারণ, একজন শিক্ষকের এমপিও কেবল এক দুই দিনের জন্য না। সারা জীবনের জন্য। একজন শিক্ষক মারা গেলে ওই পদে আরেকজন এসে যোগ দেবেন। এটা কখনও বন্ধ হবে না। এ জন্য বেশ কিছু প্রক্রিয়া আছে, এর সঙ্গে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় জড়িত, আইন মন্ত্রণালয় জড়িত, অর্থ মন্ত্রণালয় জড়িত।’

নাহিদ বলেন,আমরা বাজেটে এমপিওর জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দিয়েছি, বৈঠক করেছি, কমিটিও হয়েছে। সেই কমিটি এটা নিয়ে কাজ করছে। আমি এটা নিয়ে সংসদেও কথা বলেছি শিক্ষকদের পক্ষে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ না দিলে কী করার আছে।

আজকের বাজার : এলকে/ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭