শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন : কাদের সিদ্দিকী

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর উত্তম বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পরবর্তী গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণের দাবি ন্যায্য। এ দাবি মেনে নেয়া উচিত।

রোববার ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে একাত্মতা পোষণ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ আহবান জানান তিনি।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, যদি জানতাম শিক্ষকদের শহীদ মিনারে এসে অনশন করতে হবে তবে আমি মুক্তিযুদ্ধ করতাম না। মানুষ গড়ার কারিগরদের রাস্তায় নামতে হয়, শহীদ মিনারে রাত কাটাতে হয়, অনশন করতে হয়- এটা একটি সভ্য দেশের জন্য লজ্জার।

তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকদের প্রতি যে বৈষম্য হয়েছে, তা আমরা সমর্থন করতে পারি না। এই দুর্মূল্যের বাজারে শিক্ষকদের সাথে এই বৈষম্য চলতে পারে না। আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা আজ প্রধানমন্ত্রী, অনেক কথাই তিনি শুনতে চান না, শোনেনও না। অনেক সময় মাটিতে তার পা পড়ে না। তারপরেও বলব, আমি তার কাছে প্রকাশ্যে অনুরোধ করছি, আপনি শিক্ষকদের অসুবিধা দেখুন, বিচার করুন, তারপর ঠিক করুন।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের শহীদ মিনারে অবস্থান, সাথে সাথে অনশন এটা আপনার জন্য সম্মানের নয়। আপনি বিচার করুন, দেখুন, এদের দাবি কোন মতেই অন্যায্য নয়। আজকে হয়তো এদের ভিতরে শত্রু ঢুকিয়ে দিয়ে, দালাল ঢুকিয়ে দিয়ে আন্দোলন নষ্ট করতে পারেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এদের আন্দোলন আপনার জন্য বুমেরাং হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আপনি খুব সুখে নেই। আপনার আশেপাশে যারা আছে তারা অপদার্থ, ব্যর্থ। আপনি শিক্ষকদের সম্মান করতে চেষ্টা করুন। শিক্ষকরাও আপনাকে সম্মান করবে। আপনার অফিসের কোন পিওনেও বেতন এমন নেই। যেটা শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতনের ব্যবধান ৫ টাকা হওয়ার দরকার জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে নিবেদন করছি, আপনি এদের দাবি মেনে নিন। যারা অনশনে আছেন, এখনই তাদের অনশন ভাঙার চেষ্টা করুন। আপনি আপনার লোক পাঠিয়ে দিন, অনশন ভাঙুন এবং এদের দাবি মেনে নিন।
তিনি বলেন, এই বেতনে বাড়িতে কাজের লোকও পাওয়া যায় না। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের এত বৈষম্য হওয়ার কথা নয়। প্রধান শিক্ষকদের (মূল) বেতন ২৫ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ২৪ হাজার টাকা করুন। আমার কথা আজ না শুনলেও আগামী দিন শুনবেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, সময় থাকতে ন্যায় বিচার করুন। যখন সময় থাকবে না তখন ন্যায় বিচার তো দূরের কথা, বিচার করারও সুযোগ পাবেন না। শিক্ষকদের উদ্দেশে বঙ্গবীর বলেন, আপনারা সাহস হারাবেন না, অন্যায় করবেন না। শিক্ষক হয়ে অন্যায় করলে আপনাদের মুখ দেখানোর কোন জায়গা থাকবে না। আমি মনে করি, আপনাদের দাবি যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায় সারাদেশের মানুষের সমর্থন আপনারা পেতে পারেন।

শনিবার ২৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে সারাদেশ থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষক। প্রাথমিক শিক্ষকদের সবগুলো সংগঠনের সমন্বিত প্লাটফর্ম বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

আজকের বাজার : আরএম/এলকে ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭