শি জিনপিংই থাকছেন চীনের নেতৃত্বে

চীনের লোকসংখ্যা ১৩০ কোটি এবং তাদের অর্থনীতি হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম। ১৮ অক্টোবর চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস, এতেই ঠিক হয় কে এই পার্টির নেতা হবেন। কিন্তু বেশির ভাগ লোকেরই এই নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় কোন ভূমিকা থাকে না।

এবারের কংগ্রেসে আশা করা হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে, তবে শীর্ষ পদটিতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংই থাকবেন। কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না বা সিপিসির কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় বেজিংএর গ্রেট হল অব দি পিপল-য়ে। প্রতিনিধি আসবেন দুই হাজার ২৮৭ জন। অসংগত আচরণের জন্য ১৩ জন প্রতিনিধি আসতে পারছেন না। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০০ জন সদস্য নির্বাচিত হন।

এই কমিটি নির্বাচন করে ২৪ জনের পলিটব্যুারো, আর সেখান থেকে বেছে নেয়া হয় সাত জনের পলিটব্যুারো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের। এগুলোই হচ্ছে চীনের আসল সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতার অধিকারী। এসব পদে ভোট হলেও এদের অনেককেই আগে থেকে বেছে নেন বর্তমান নেতৃত্ব, আর কমিটিও তাদের মেনে নেয়।

কেন্দ্রীয় কমিটির পার্টির শীর্ষ নেতা সাধারণ সম্পাদককে নির্বাচিত করে, আর তিনিই হন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ পদে এবারও খুব সম্ভব শি জিনপিংই থাকবেন। তবে মনে করা হচ্ছে পলিটব্যুারো স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রায় সম্পূর্ণ নতুন করে পুনর্গঠিত হবে। অনেকের বয়েসই ৬৮ পেরিয়ে গেছে তাই তারা হয়তো অবসর নেবেন। তবে দুর্নীতি দমন সংস্থার প্রধান ওয়াং কিশান হয়তো থাকবেন কারণ তিনি শি জিনপিংয়ের ঘনিষ্ঠ।

সাধারণত এসময় চীনের ভবিষ্যত নেতা কে হবেন তার আভাস পাওয়া যায়। কারণ আর পাঁচ বছর পরই হয়তো তিনি ক্ষমতাসীন হবেন। তবে এবার মনে করা হচ্ছে শি ঐতিহ্য ভেঙে এটা বিলম্বিত করবেন।

মনে করা হচ্ছে শি জিনপিংয়ের ক্ষমতা এবার আরো সংহত করা হবে। তিনি এখন ‘কেন্দ্রীয়’ নেতার পদ সহ নজিরবিহীন সংখ্যক পদে আসীন রয়েছেন। অনেকে তাকে মাও জেদং বা দেং শিয়াওপিং এর মতো নেতাদের সমতুল্য বলে মনে করেন। হয়তো তার নীতিকে ‘শিং জিনপিং চিন্তাধারা’ হিসেবে পার্টির চার্টারে সন্নিবেশিত করা হবে। হয়তো প্রেসিডেন্ট পদে চিরাচরিত দুই মেয়াদের বেশি না থাকার নীতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে।

দুনীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর পদক্ষেপের ফলে চীনে তার বিরোধীদের ওপর ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে ‘শি-কাল্ট’, যাকে বলা যায় ব্যক্তিপূজা। তাকে নিয়ে গান রচিত হয়েছে যা রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বাজানো হচ্ছে। নাগরিকরা তাকে নাম দিয়েছেন ‘শি দাদা’ – চীনা ভাষায় যার অর্থ আংকল শি বা শি চাচা।

আগামিতে শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে চীনের নেতৃত্বমূলক ভূমিকাও সম্প্রসারিত হতে পারে।দেখার বিষয় উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে শি জিনপিংয়ের চীন আগামীতে কি করে। তাছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে প্রভাব বৃদ্ধির নীতি, ‘ওয়ানবেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্প এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে চীনের একটি বিকল্প পরাশক্তি হিসেবে অবস্থান নেয়া, এসব ক্ষেত্রে কি ঘটে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৮ অক্টোবর ২০১৭