সাভারে স্কুল ব্যাগে মিলল শিশুর লাশ, পিকআপ ভ্যান চালককে পিটিয়ে হত্যা

অপহরণের দুইদিন পর সাভারে স্কুল ব্যাগ থেকে ছয় বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত মেহেদী হাসান বরিশাল জেলার কবির হোসেনের ছেলে। সে সাভারে মায়ের সাথে আব্দুল করিমের বাড়িতে ভাড়া থাকত।

এদিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পৌর এলাকার আনন্দপুর মহল্লায় ২০ বছরের এক পিকআপ ভ্যান চালককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার গভীর রাতে সাভারের কাকাব ও আনন্দপুর মহল্লা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার সাভার ও আশুলিয়ার পৃথক স্থান থেকে ১০ ও ১২ বছরের তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিনিয়ত এ উপজেলায় শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ হত্যার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পুলিশ জানায়, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কাকাব এলাকায় ছয় বছরের শিশু মেহেদী হাসান মায়ের সাথে আব্দুল করিমের বাড়িতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকত। গত ১২ অক্টোবর শিশুটিকে পাশের রুমের ভাড়াটিয়া জসিম ও আনিকা কৌশলে অপহরণ করে প্রতিবেশী আরমান নামের এক যুবকের হাতে তুলে দেন।

পরে ওই তিন অপহরণকারী শিশুটির দরিদ্র বাবা-মার কাছে মুঠোফোনে বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শিশুটির বাবা-মা ধার দেনা করে নগদ ১৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের পাঠান। মুক্তিপণের বাকি টাকা দিতে না পারায় অপহরণকারীরা শিশুটিকে রশি দিয়ে পেঁচিয়ে নির্মমভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্কুল ব্যাগে করে বাড়ির ৪০০ গজ সামনে একটি জঙ্গলে ফেলে দেন।

মঙ্গলবার শিশুটির বাবা-মা সাভার মডেল থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে।

পরে পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারে শিশুটিকে পাশের রুমের ভাড়াটিয়ারা অপহরণ করেছে। অপহরণকারী জসিম ও আনিকা নামের দুজনকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

এরপর গভীর রাতে অপহরণকারীদের নিয়ে তাদের তথ্য অনুযায়ী কাকাব এলাকার একটি জঙ্গল থেকে ব্যাগ ভর্তি শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।

এ ঘটনার পর থেকে আরমান নামের ওই অপহরণকারী পলাতক রয়েছে।

অপর ঘটনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আনোয়ার হোসেন নামের এক পিকআপ ভ্যান চালককে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, সোমবার পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে আনোয়ার বিউটি আক্তার নামের এক তরুণীকে বিয়ে করে সাভারের শাহীবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় উঠেন। মঙ্গলবার বিকালে কে বা কারা আনোয়ার হোসেনকে সাভারের আনন্দপুর এলাকায় একটি এক তলা ভবনে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে এক নারীসহ চারজন ব্যক্তি আনোয়ার হোসেনকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে তার বাবা আফাজ উদ্দিনকে ছেলের লাশ নেয়ার জন্য খবর দেন।

এরপর থেকে ওই নারীসহ চার ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন। পরে আনোয়ার হোসেনের বাবা সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।

নিহত ওই যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত যুবকের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার কান্দি গ্রামে।

শিশুসহ দুজনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশিচত করে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’