আজ হুমায়ুন ফরীদির জন্মদিন। বাংলাদেশের প্রখ্যাত মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি বেঁচে থাকলে ৬৬ বছরে পা রাখতেন তিনি।
কিংবদন্তি এই অভিনেতা ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন। হুমায়ুন ফরীদির বাবার নাম এ টি এম নুরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম।
তার বাবা ছিলেন মুখ্য পাট পরিদর্শক। বাবার বদলির চাকরির সুবাদে তাকে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ অনেক জেলায় ঘুরতে হয়েছে। হুমায়ুন ফরীদির ডাকনাম পাগলা, সম্রাট ও গৌতম। পরিবারে দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে হুমায়ুন ফরীদি অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন ফরীদি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি জড়িয়ে পড়েন নাটকের সঙ্গে। সেলিম আল দীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগীও ছিলেন তিনি।
১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নাট্য উৎসব আয়োজনেরও প্রধান সংগঠক ছিলেন ফরীদি। সেখানে “আত্মস্থ ও হিরণ্ময়ীদের বৃত্তান্ত” নামে একটি নাটক লিখে নির্দেশনা দেন এবং অভিনয়ও করেন তিনি।
১৯৭৬ সালে ছাত্রাবস্থায়ই ফরীদি ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক “শকুন্তলা”, “ফণীমনসা”, “কীত্তনখোলা”, “মুন্তাসির ফ্যান্টাসি”, “কেরামত মঙ্গল” প্রভৃতি।
১৯৯০ সালে নিজের পরিচালনায় “ভূত” দিয়ে শেষ হয় ফরীদির ঢাকা থিয়েটারের জীবন।
আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় “নিখোঁজ সংবাদ” ফরীদির অভিনীত প্রথম টিভি নাটক।
তার অন্য নাটকগুলোর মধ্যে ছিলো “সংশপ্তক’’, “হঠাৎ একদিন”, “একটি লাল শাড়ি”, “নীল নকশার সন্ধানে”, “দূরবীন দিয়ে দেখুন”, “বকুলপুর কতদূর”, “মহুয়ার মন”, “সাত আসমানের সিঁড়ি”, “একদিন হঠাৎ”, “কাছের মানুষ”, “কোথাও কেউ নেই”, “মোহনা”, “ভবেরহাট”, “জহুরা”, “আবহাওয়ার পূর্বাভাস” ইত্যাদি।
হুমায়ুন ফরীদির প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু হয় তানভীর মোকাম্মেলের “হুলিয়া”-র মধ্য দিয়ে। এরপর তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে রয়েছে “সন্ত্রাস”, “বীরপুরুষ”, “দিনমজুর”, “লড়াকু”, “দহন”, “বিশ্বপ্রেমিক”, “কন্যাদান”, “আঞ্জুমান”, “পালাবি কোথায়”, “একাত্তরের যীশু”, “ব্যাচেলর”, “জয়যাত্রা”, “শ্যামল ছায়া” ইত্যাদি।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন বাংলাদেশের অভিনয় অঙ্গনের এই মহানায়ক। তার অসাধারণ সব সৃষ্টির মধ্য দিয়েই ফরীদি বাংলাদেশে বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে।
আজকের বাজার/একেএ
