হয়রানি বন্ধে চট্টগ্রাম কাস্টমসে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চান ব্যবসায়ীরা

অনলাইনে আইজিএম দাখিল করতে না পারাসহ নানা ধরনের হয়রানি বন্ধে চট্টগ্রাম কাস্টমসকে শতভাগ অটোমেশনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গণশুনানিতে এ দাবি জানান তারা।

গণশুনানিতে বিভিন্ন সমস্যা উত্থাপনের পাশাপাশি কাস্টমসকে গতিশীল ও কার্যকর করতে সুপারিশ তুলে ধরেন স্টেকহোল্ডাররা। স্টেকহোল্ডারদের এসব সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কাস্টমস কমিশনার এ.এফ.এম. আবদুল্লাহ।

চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে সবার আগে জনবল সংকট সমাধান করতে হবে। গত ১০ বছরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাজ বেড়েছে ১০ গুণ; কিন্তু জনবল মোটেও বাড়েনি। এজন্য কাস্টমসে মানুষ দুর্নীতি করার সাহস পাচ্ছে। এছাড়া এখানকার সক্ষমতা বৃদ্ধি, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চালু এবং কাস্টমস আইনকে যুযোপযোগী করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব সার্ভারের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে হবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছি। এখন পর্যন্ত আমরা যে সব সমস্যার কথা বলেছি- এখনও সেগুলোর সমাধান হয়নি। ওসব সমস্যার সমাধান করতে না পারলে ২০২১ সালের মধ্যে পোশাক খাতে ৫ কোটি ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো না। কাস্টমস আমাদের কথা শুনে; কিন্তু কাজ করে না। চট্টগ্রাম বন্দর এবং কাস্টমসের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় ব্যবসায়ীদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তাই চট্টগ্রাম কাস্টমসও ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই ব্যবসায়ীরা সেবা পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতি হবে।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, আমরা আগেও অনেক সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। এসব সমস্যার সমাধান হয়নি। পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চালু না হওয়ায় ফাইল নিয়ে কাস্টমসের আসতে হচ্ছে। এতে বারবার হয়রানির শিকার হতে হয়। একইসঙ্গে সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা ফাইল পেনাল্টি দিনদিন বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমশিনার এ.এফ.এম. আবদুল্লাহ বলেন, আপনাদের সমস্যা ও পরামর্শগুলো আমরা বিবেচনা করবো। এসব সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আলোচনায় বসে সমাধানের চেষ্টা করবো। আপনারা কাস্টমসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

জনবল সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনবল সমস্যার কথা আমরা সরকারকে জানিয়েছি। এখন সরকার থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাইলেই কিছু করতে পারি না। তবে আমরা দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছি। তা না করলে এই কাস্টমস থেকে এতো রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হতো না। কাস্টমসের বিভিন্ন সমস্যা জানতে এবং সেগুলোর সমাধানে প্রতি মাসে গণশুনানি আয়োজনের চিন্তা করছি।

রাজস্ব প্রশাসন অধিকতর গতিশীল করা এবং করদাতাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে ‘সুশাসন ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা কাঠামো’ অনুসরণ করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়।