১১৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে

A Bangladeshi woman casts her vote at a polling station in Dhaka, Bangladesh, Sunday, Jan. 5, 2014. Police fired at protesters and more than 100 polling stations were torched in Sunday’s general elections marred by violence and a boycott by the opposition, which dismissed the polls as a farce. (AP Photo/Rajesh Kumar Singh)

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, রংপুর, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও সিলেটসহ ১৬ জেলার ১১৬ উপজেলায় আজ ভোটগ্রহণ হচ্ছে। নির্বাচন উপলক্ষে আজ সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে ইসি।
দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৭৭ জন প্রার্থী। ভাইস চেয়ারম্যান ৫৩৯ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯৪ জন লড়াই করছেন। ২৩ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন।
ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাসসকে জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন থেকে সব ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে কোন রকম অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
শনিবার মধ্যরাত থেকে সকল ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এবারের উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে।
নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখতে শনিবার থেকে মাঠে নেমেছে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পরেও দুই দিন মাঠে থাকবেন তারা। এছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ রয়েছে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রভেদে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৪ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন নিয়োজিত রয়েছে। আর স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রতি এলাকায় দুই থেকে তিন প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব এবং কোস্টগার্ড, পুলিশ, আমর্ড পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে জেলা পর্যায়ে তিন দিনের জন্য মনিটরিং সেল এবং নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ইসি সচিবালয়ে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
ভোটের নিরাপত্তায় নিয়মিত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে খাগড়াছড়ির ৮ উপজেলা, বান্দরবানের ৭ উপজেলা ও রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় সেনা সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ১০ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৮ উপজেলায় ভোট হয়, ভোট পড়ে ৪৩ শতাংশ। প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে ভোট হয় ৭৮ উপজেলায়। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান হন ২৮ জন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮ মার্চ ভোটের দিন রেখে ১২৯ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ৬ উপজেলায় ভোটের দরকার পড়ছে না। আরও ৬ উপজেলার ভোট পিছিয়েছে ইসি। আদালতের নির্দেশে গোবিন্দগঞ্জের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। এজন্য ১৮ মার্চ ১১৬ উপজেলায় ভোট হচ্ছে।
আগামী ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে ও ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের পর জুনে পঞ্চম ধাপের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। দেশে বর্তমানে ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮০ টিতে এবার ভোট হবে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১২ টি উপজেলায় এবছর ভোট হবে না। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ৬ ধাপে এর অধিকাংশগুলোতে ভোট হয়েছিল। আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকায় এই নির্বাচন করতে হচ্ছে।
১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে ৬ ধাপে ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি।

সূত্র – বাসস