হোলি আর্টিজানে নিহতদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা

সকাল থেকেই থমথমে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়ক। শুরু হয়েছে হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন।

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের রেস্টুরেন্টের আগের ভবনটি আজ শনিবার চার ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ ১ জুলাই শনিবার সকাল ১০ থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সেখানে ফুল দিয়ে যে কেউ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সর্বস্তরের মানুষ।

তবে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হোলি আর্টিজানের ভেতরে গিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের কিছুক্ষণ পর তিনি চলে যান।

সকাল থেকে ১০টার আগে আরও কয়েক দেশের কূটনীতিক হোলি আর্টিজানের ভেতরে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তবে সে সময় ৭৯ নম্বর সড়কে যাওয়ার তিনটি পথেই ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। পুলিশের গাড়ি ও সীমিত কয়েকটি গাড়ি ছাড়া আর কোনো গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

সাংবাদিকদেরও এ সময় বাড়িটির কাছাকাছি যেতে দেওয়া হয়নি। সড়কের মোড়েই তাদের অবস্থান করতে হয়। গুলশান থানা আওয়ামী লীগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরাও ৭৯ নম্বর সড়কে এসে অবস্থান করছিলেন।

তবে ১০টার দিকে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় কাদের বলেন, দেশে এখনও জঙ্গি নির্মূল হয়নি তবে নিয়ন্ত্রণে আছে।

গুলশানের কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনরত পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীমউদ্দিন জানান, জাপানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তাদের কিছু সময় পরেই আসেন ইতালির রাষ্ট্রদূত।

শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ভবনের সামনে সাদা কাপড়ে মোড়ানো লম্বা আকৃতির একটি বেদির মতো তৈরি করা হয়েছে।

রেস্টুরেন্টটির মালিকদের একজন সাদাত মেহেদী জানান, গত বছর হামলার শিকার হওয়া ভবনটির ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে মালিকপক্ষ নিজেদের থাকার জন্য মেরামতের কাজ করছেন।

উল্লেখ, গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর প্লটের বাড়িটিতে সশস্ত্র হামলা চালায় পাঁচ জঙ্গি। জঙ্গিরা নয়জন ইতালিয়ান, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় , বাংলাদেশের তিনজন নাগরিক ও দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জনকে হত্যা করে। শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে, এই উৎকণ্ঠার ভেতর দিয়ে রাত কাটে। পরদিন সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে সেখানে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি। অবসান ঘটে প্রায় ১১ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির।

জঙ্গি হামলার পর প্রায় সাড়ে চার মাস আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকার পর গত বছরের ১৩ নভেম্বর পুলিশ মালিককে এর দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। দোতলা ওই ভবন নিজেদের বাসস্থান হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু হয় কাজ। মেরামতের কাজ এখনও চলছে।

এরই মধ্যে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে ভবনটি আজ চার ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে ভবনটি।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ১ জুলাই ২০১৭