অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সে অনুষ্ঠানে তিনি এই গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করেন। এরআগে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনীও বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এতে করে বিশ্ববাসী জানতে পারছে আমাদের সম্পর্কে, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে। বঙ্গবন্ধু আমাদের আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, অশুভ পথে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা সংস্কৃতি চর্চা করতে পারে না। এদের মানসিকতা একটু ভিন্ন। আমরা কিন্তু আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা ও এর ওপর গবেষণার ব্যবস্থা করছি। গ্রন্থমেলা শুধু বেচাকেনার জন্য নয়, এটি আকর্ষণ করে, জ্ঞান চর্চার দ্বার উন্মুক্ত করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমিরেটাস অধ্যাপক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, সুইডেনের কবি ও লেখক আর্নি জনসন, মিশরের কবি ও সাংবাদিক ইবরাহীম এ মাসরি, ক্যামেরুনের কবি ও অধ্যাপক জয়েস এসোনটেনডেন্ট, যুক্তরাজ্যের কবি এডমিস মিডোজ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ইবরাহীম হোসেন খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামছুজ্জামান খান প্রমুখ।

রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ মেলার পরিসর এবার আরও বেড়েছে। বেড়েছে বইয়ের স্টল নিয়ে বসা প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা।

প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুট এলাকায় ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ হাজার ৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৩৬টি লিটল ম্যাগাজিনকে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বাংলা একাডেমিসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পুরো ফেব্রুয়ারি মাস বইয়ের এ উৎসবে বই বিক্রি করবে ২৫ শতাংশ ছাড়ে।

এবারও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে রয়েছে শিশুচত্বর। ওই কর্নারকে সাজানো হয়েছে শিশুকিশোরদের জন্য বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায়।

ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। মাসব্যাপী গ্রন্থমেলায় এবারও ‘শিশুপ্রহর’ ঘোষণা করা হবে।

গ্রন্থমেলা উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ১২ জনকে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ তুলে দেন।

১০টি শাখায় ২০১৭ সালের পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- মোহাম্মদ সাদিক ও মারুফুল ইসলাম (কবিতা), মামুন হুসাইন (কথাসাহিত্য), মাহবুবুল হক (প্রবন্ধ), রফিকউল্লাহ খান (গবেষণা), আমিনুল ইসলাম ভুইয়া (অনুবাদ সাহিত্য), কামরুল হাসান ভূঁইয়া ও সুরমা জাহিদ (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য), শাকুর মজিদ (আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা), মলয় ভৌমিক (নাটক), মোশতাক আহমেদ (বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী) এবং ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ (শিশুসাহিত্য)।

আজকের বাজার : সালি / ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮