করোনার ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। ঢাকা থেকে ভ্যাকসিন আসার পর সিভিল সার্জন অফিসেই সংরক্ষণ করা হবে। সেখান থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও উপজেলাগুলোতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘এ পর্যন্ত গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী এক দফায় এক লাখের মতো ভ্যাকসিন পাঠানো হবে। আমাদের অফিসে সংক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে। তবে পাওয়ার পরপরই আমরা তা দ্রুত সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দেবো।’
সিভিল সার্জন বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। সরকার এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। এ নীতিমালার আলোকে আমরা পরিকল্পনা করেছি। পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় সংরক্ষণ, বিতরণ ও ভ্যাকসিন প্রদানে বিলম্ব বা কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’
ডা. রাব্বি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যন্ত ইপিআই কর্মসূচির কাঠামো সক্রিয় আছে। ফলে উপজেলা পর্যায়েও ভ্যাকসিন সংরক্ষণে কোনো অসুবিধা হবে না। কোনো উপজেলায় ‘আইএলআর’ ফ্রিজ বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে আমরা এখনই তা সমাধান করে ফেলছি। ভ্যাকসিন দেশে আসার আগেই আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকবো।’
সিভিল সার্জন বাসস’কে আরো বলেন, ‘সরকারি মেডিকেল কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং সক্ষমতা-সম্পন্ন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোকে ভ্যাকসিন পুশ করার অনুমতি দেয়া হবে। করোনার ভ্যাকসিন সাধারণ ইনজেকশনের মতো মাংসে দেয়া হয়। তারপরও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স ও টেকনেশিয়ানদের দিয়ে এ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এ গ্রুপকে আরো যোগ্য করতে বিশেষজ্ঞ দিয়ে ট্রেনিং সেশনের ব্যবস্থা করা হবে। আশা করি, দু’একদিনের মধ্যে এ ট্রেনিং সেশনের শিডিউল আমরা পেয়ে যাবো।’
তিনি জানান, ‘সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী আমরা একটি তালিকা ইতিমধ্যে করেছি। তবে উচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসলে এখানে আমরা দ্রুত সংশোধন করে নিতে পারবো।’
এদিকে, উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি প্রসঙ্গে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বাসস’কে জানান, ‘ভ্যাকসিন রাখার মতো পর্যাপ্ত উপযোগী স্থান আমাদের আছে। এ ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। ১৭ সদস্যের এ কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যান উপদেষ্টা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ কমিটি পর্যায়ক্রমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম বাসস’কে জানান, ‘ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায় একটি টেকনিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বা তাঁর প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে কমিটিতে রাখা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’
আবুল হাশেম আরো বলেন, ‘এর মধ্যে আরো একটি সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসক নিজেই করোনাক্রান্ত হয়ে পড়ায় বৈঠক হয়নি। তবে কমিটির পরামর্শ মতে করপোরেশন দ্রুত সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে।’