বেনাপোল কাস্টমসে হামলা: ইমিগ্রেশন ওসি প্রত্যাহার

বেনাপোল বন্দরে কাস্টমস হলে কর্মকর্তাদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার ঘটনায় দায়ী বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর শরীফকে নিরস্ত্র করাসহ খুলনা রেঞ্জে অফিসে ক্লোজ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ওমর শরীফসহ ইমিগ্রেশনের অন্যান্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের নিজস্ব তদন্তের পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে কাস্টমস হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. জাকির হোসেন এই কমিটির প্রধান।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেনাপোল কাস্টমস ও খুলনা ডিআইজি অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০ ডিসেম্বর বুধবার ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ওমর শরিফের ভারত থেকে আসা ব্যাগ দেশে পাচার করতে না দেওয়ায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলা ও বেনাপোল কাস্টমস হলে পুলিশ ভাংচুর চালায় বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় প্রায় ১০ জন কাস্টমস কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়।

সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাশেদুর রহমানের কাছে গোপন সংবাদ আসে যে, একজন যাত্রী একটি বৃহদাকৃতির বাণিজ্যিক ব্যাগ পাচার করবে।

যাত্রীর নাম শাখাওয়াত হোসেন। যাত্রী কাস্টমস ব্যাগেজ কাউন্টারে আসলে কর্মকর্তারা যাত্রী শাখাওয়াতকে কাস্টমস তল্লাশীর জন্য ব্যাগ উপস্থাপন করতে অনুরোধ করলে যাত্রী বলেন যে, এ ব্যাগ চেক করা যাবে না।

এটি ওসি ওমর শরিফ এর ব্যাগ। কর্মকর্তারা ব্যাগেজ তল্লাশির পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ওমর শরিফ এ সময় কাস্টমস কাউন্টারে দৌড়ে আসেন এবং রাশেদুর রহমানকে ব্যাগ ছেড়ে দিতে বলেন।

ছাড়ার জন্য বার বার তাগিদ দিতে থাকেন। রাশেদুর রহমান ব্যাগটি বাণিজ্যিক বলে তল্লাশি হবে বললে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।

ওসি কাস্টমস কর্মকর্তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। কর্মরত কর্মকর্তারা ওসি’র অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলে অন্তত ২০ জন পুলিশ কাস্টমস কাউন্টারে তাণ্ডব শুরু করে।

মারধর করে কাউন্টারের ব্যাপক ভাংচুর চালায়। ঘটনার প্রতিবাদে কর্তব্যরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের সমর্থনে অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে, পুলিশ তাদেরকেও লাঞ্চিত এবং মারধর করে।

তবে ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ওমর শরীফ দাবি করেছেন, ভারত ফেরত এক পাসপোর্টযাত্রীর লাগেজে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে কাস্টমস কর্মকর্তা ও পুলিশের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায় ধাক্কাধাক্কি বেঁধে যায়। কাস্টমস কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম আমাকে গালাগালি করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

আজকের বাজার: এলকে/ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭