‘গণমাধ্যম সাহসী ভূমিকা না রাখলে গণতন্ত্রের বিকাশ হয় না’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, ‘বিচারহীনতা এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সুষ্ঠু ও সাহসী সাংবাদিকতা করা যায় না। গণমাধ্যম সাহসী ভূমিকা রাখতে না পারলে গণতন্ত্রের বিকাশ হয় না।’

সাহসী সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবলের ১৮তম হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাংবাদিক শামছুর রহমান হত্যাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘঠিত প্রায় দুই ডজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে সাংবাদিক সমাজের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা আছে।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে সাংবাদিকরা সাহসের সাথে কলম ধরতে পারবে না, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে সাহসের সাথে লিখতে পারবে না।’

এসময় তিনি দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন না, তখনো মুক্ত গণমাধ্যমের দাবিতে, সাংবাদিকদের অধিকারের প্রশ্নে সংগ্রাম করেছেন। ক্ষমতায় এসে সাংবাদিকদের কল্যাণে তিনি অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন।’

সাংবাদিক শামছুর রহমান হত্যাসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার এবং হত্যায় জড়িতরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানানোর কথা বলেন তিনি।

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নবনির্বাচিত মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, ‘সাধারণ মানুষ খুন হলে বিচার হয়, যে কোনো পেশাজীবীর মানুষ খুন হলে তার বিচার হয়। কেবল সাংবাদিক খুন হলে বিচার হয় না। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই সরকারকে নিঃশর্তভাবে সমর্থন করি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, আমাদের একজন সহকর্মী খুন হবে, আর যুগের পর যুগ তার বিচার পাব না।’

তিনি বলেন, বিএফইউজের নবনির্বাচিত কমিটি জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করবে, নবম ওয়েজবোর্ডের দাবিতে আন্দোলন করবে, তেমনি সাহসী সাংবাদিক শামছুর রহমানসহ সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলবে।

যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি সাজেদ রহমান।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের নির্বাহী সদস্য পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. আব্দুল মাবুদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, প্রেসক্লাব সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে নেতারা শহীদ সাংবাদিক শামছুর রহমানের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। পরে প্রেসক্লাব আয়োজিত দোয়া মাহফিলেও অংশ নেন নেতারা।

সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরও দিবসটি উপলক্ষে কালো ব্যাজ ধারণ, শামছুর রহমানের কবর জিয়ারত এবং প্রেসক্লাবের দোয়া মাহফিলে অংশ নেয়।

আজকের বাজার/এমএইচ