টেস্টে ১০ ইনিংস পর ২৫০ পেরোল বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে এখন পর্যন্ত ৪০০’র বেশী রান তুলেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের এই ইনিংসটি ১০টি ইনিংস পরে প্রথম ২৫০ বা তার বেশি রানের ইনিংস।

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ৪২৯ রান তুলেছিল বাংলাদেশ, যদিও সেই টেস্টে বাংলাদেশ ইনিংস ব্যবধানে হেরে গিয়েছিল।

এরপর বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের মাটিতে আফগানিস্তানের সাথে এবং ভারত ও পাকিস্তানের মাঠে টানা ৪টি টেস্ট ম্যাচে হেরেছে।

এই চারটি টেস্টের মধ্যে তিনটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ, আর আফগানিস্তানের সাথে হেরেছে ২২৪ রানে।

সব শেষ পাচঁটি টেস্টে অর্থাৎ ১০ ইনিংসে কোনো ম্যাচেই বাংলাদেশ ২৩৩-এর বেশি রানই করতে পারেনি।

সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দুটিতেই বাংলাদেশ জয় পায়।

এর আগে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের সাথে একটি টেস্ট সিরিজ ১-১ ম্যাচে ড্র করে।

কখনো জিম্বাবুয়ে, কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইদানিং আবার কখনো শ্রীলঙ্কার সাথে দু’একটি জয় বা ড্র ছাড়া বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট রেকর্ড বেশ করুণ বলা চলে।

১১৯তম টেস্ট ম্যাচ খেলতে থাকা বাংলাদেশ ১৩টি টেস্টে জয় পেয়েছে, আর ড্র করেছে ১৬টি টেস্ট – যার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বৃষ্টি বড় ভূমিকা রেখেছে।

কারণ কী?

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং – এই তিন বিভাগেই দুর্বলতা বেশ চোখে পড়ার মতো।

একে ধৈর্য ধরে ব্যাট করতে না পারা, তার ওপর যখন উইকেটে থাকার প্রয়োজন তখন এমন শট খেলে আউট হওয়া যেটা দেখে মনে হবে বেশ দ্রুত রান তোলা জরুরি।

চলতি টেস্ট ম্যাচেও যেমনটা দেথা গেছে – বেশ নির্ভার ব্যাট করতে থাকা দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও তামিম ইকবাল জিম্বাবুয়ের পেস বোলারদের বল উইকেট কিপারের হাতে তুলে দিয়ে আউট হয়েছেন। তাও স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে।

তিরিপানোর বল যখন তামিম টোকা দিয়ে কিপারে গ্লাভসে পাঠান, তখন তিনি ৮৯ বল খেলে ফেলেছেন। ফলে থিতু হওয়ার পরেই ৪১ররানেই ফিরতে হয় তাকে।

এমনকি ১৩৯ বল খেলা নাজমুল হোসেন শান্তও ৭১ রানে থাকা অবস্থায় বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। যেমনটা এর আগে দেখা গিয়েছিল যে মাহমুদু্ল্লাহ রিয়াদ পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহের হ্যাটট্রিক বলে বেশ সপাটে ব্যাট চালিয়ে আউট হয়েছেন।

এই অভ্যাসের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা টেস্ট ক্রিকেটে খুব কমই পুরো সেশন কোনো উইকেট না হারিয়ে কাটিয়েছেন।

আরো দেখা গেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কোনো নির্দিষ্ট সেশনের শেষ হওয়ার আগে বা দিনের একদম শেষ মুহূর্তে উইকেট দিয়ে আসেন।

যদিও তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম বা সাকিব আল হাসানরা বাংলাদেশের টেস্ট ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা ঢেকে দেন কিছু ইনিংস খেলে, কিন্তু বোলারদের মধ্যে ২০ উইকেট নেয়ার মতো আগ্রাসী মনোভাব দেখা পাওয়া দুষ্কর।

যেমন বাংলাদেশের মাটিতে কিছু টেস্টে স্পিন বোলিং দিয়ে ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলেরও ২০ উইকেট নিয়েছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে, কিন্তু ঘরের বাইরে এমনটা খুব কমই দেখা গেছে।

এজন্য বাংলাদেশ শেষবার দেশের বাইরে যখন টেস্ট সিরিজে জয় পেয়েছে, তারপর এক দশক পেরিয়ে গেছে।

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিকাংশ ক্রিকেটার ধর্মঘটে যাওয়ার পর একটি দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের সঙ্গে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতে।

আজকের বাজার/এমএইচ