থানার সামনে আগুন দেয়া কলেজছাত্রীর মৃত্যু

রাজশাহীর শাহমখদুম থানার সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো কলেজছাত্রী লিজা (১৯) মারা গেছেন।

বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল্লাহ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বামীর নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ না নেয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর থানার সামনেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন লিজা।

তিনি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধানপাড়া এলাকার আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের পালিত মেয়ে। লিজা রাজশাহী মহিলা কলেজের বাণিজ্য দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। নগরীর পবাপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন তিনি।

লিজার স্বজনরা জানান, গত ২০ জানুয়ারি লিজার সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার খানদুরা গ্রামের খোকন আলীর ছেলে ও রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাখাওয়াত হোসেনের (২০) বিয়ে হয়।

পরিবারকে না জানিয়ে সাখাওয়াত হোসেন লিজাদের গোবিন্দগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করেন। সাখাওয়াতও রাজশাহীতে একটি ছাত্রাবাসে থাকেন।

পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় সাখাওয়াত লিজাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সাখাওয়াত লিজাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, লিজা শনিবার দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে শাহমুখদুম থানায় যান। সেখানে ডিউটি অফিসারকে অনুরাধ করেন তার অভিযোগ রেকর্ড করার জন্য। কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগ রেকর্ড করেনি।

থানার সামনের একটি দোকান থেকে কেরোসিন কিনে নিজেই গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তার শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে যায়। আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে পানি ঢেলে আগুন নেভায়। স্থানীয়রা লিজাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে লিজাকে পুলিশ পাহারায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়।

লিজার গায়ে আগুন দেওয়ার বিষয়ে শাহমুখদুম থানার ওসি মাসুদ পারভেজ দাবি করেন, লিজার অভিযোগ শোনা হয়েছিল। তার অভিযোগ মামলা আকারে রেকর্ডের নির্দেশও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে হঠাৎ করেই থানা থেকে বের হয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন।

আজকের বাজার/এমএইচ